বিএসএমএমইউ ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে চিকিৎসকরা

পিবিএ,ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার পদত্যাগের দাবিতে রবিবার (৯জুন) দুপুর থেকে তার কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন নিয়োগবঞ্চিত বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা।

নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আজ সকালে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনকালে তাদের ওপর বর্বরোচিত ও ন্যক্কারজনক পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আমরণ অনশনে নামতে বাধ্য হন বলে জানান চিকিৎসকরা। জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিএসএমএমইউ ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে চিকিৎসকরা

এদিকে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে উপাচার্য় অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া তার কার্যালয়ের প্রবেশদ্বারের বাইরে অনশনরত চিকিৎসকদের সামনে এসে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল তারা কোনো অনিয়ম খুঁজে পায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই আগামীকাল থেকে ভাইভা শুরু হবে। তবে এ সময় বঞ্চিত চিকিৎসকরা নানা উদাহরণ টেনে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করতে থাকেন।

এরপর অন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে পুলিশি প্রহরায় তিনি (ভিসি) চলে গেলেও বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা এখন পর্যন্ত ব্যানার টাঙিয়ে বসে আছেন। তাদের ঘিরে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিত আনসাররা। প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান নিয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, অনিয়মের কারণে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানাতে তাদের একটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন।

উল্লেখ্য, বিএসএমএমইউতে ২০০ চিকিৎসক নিয়োগের জন্য গত ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফল মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত হয়। ১৮০ জন চিকিৎসা কর্মকর্তা ও ২০ জন দন্তচিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন অংশ নেন।

লিখিত পরীক্ষায় এক পদের বিপরীতে চারজন উত্তীর্ণ হন। এ হিসেবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। চূড়ান্ত নিয়োগের লক্ষ্যে তাদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানানো হয়।

কিন্তু ফল ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ‘সুযোগবঞ্চিত’ চিকিৎসকরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ‘ছেলের জন্য সাজানো নিয়োগ, লজ্জা, ভিসি লজ্জা; ভিসির পদত্যাগ চাই; অর্থের বিনিময়ে এ নিয়োগ মানি না, মানবো না; প্রশ্নফাঁসের এ নিয়োগ কাদের জন্য; আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে’ স্লোগান লেখা পোস্টার সেঁটে দেন।

আগামীকাল (১০ জুন) অনুষ্ঠিতব্য মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে রবিবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে একাধিক চিকিৎসক আহত হন।

পিবিএ/আরআই

আরও পড়ুন...