‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চিহ্নিত করা হবে’

২০০৯ সালে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনপ্রধান বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক এ এল এম ফজলুর রহমান বলেছেন, কোনরকম প্রভাবিত নয় নিরপেক্ষ ও নির্মমভাবে থেকে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিদেশ বিদেশি ষড়যন্ত্রকে জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে পিলখানার ভেতরে কমিশনের প্রথম মিটিং শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান

বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক এ এল এম ফজলুর রহমান বলেন, আমরা কোনো রকম প্রভাবিত হবো না। কোনো কিছুর দ্বারা আমরা প্রভাবিত হবো না। যেহেতু এটা জাতীয় সমস্যা। হাজাত বছরে এমন ঘটনা ঘটে নি যে অল্প সময়ে এতো অবিচার ও এতো মানুষ নিহত হয়েছে। আমি দেশবাসীকে জামাতে চাই, এই বিডিআর বিদ্রোহের পর যারা নির্যাতিত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন, বঞ্চিত হয়েছেন সব কিছু আমরা নজরে নেবো। পাশাপাশি অতি সহমর্মিতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে আমরা তাদের ক্ষত নিরাময় করার চেষ্টা করবো। আমাদের কাজ শেষে প্রশ্ন যেনো না উঠতে পারে। এই দিকে আমরা সজাগ থাকবো।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের প্রতি আমি একটি অনুরোধ করতে চাই আপনারা আমাদের বক্তব্য ইতিবাচকভাবে প্রচার করবেন। না হলে জাতীয় উদ্দেশ্য ব্যহত হতে পারে।

আজকে আমরা প্রথম মিটিং করলাম। আমরা পরিচিত হোলাম। কি ভাবে আমরা কাজ করবো সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের কিছু চিঠি লিখতে হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি আমাদের সাচিবিক সুবিধা দিতে হবে।

অফিস দিতে হবে। আজ আমরা বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ক্লোন করেছি। তিনি আমাদের সাদরে গ্রহণ করেছেন। ৫ রাইফেল ব্যাটালিয়নের একটা অফিস আমাদের কাজ চালানোর জন্য দিয়েছেন।

বিডিআরের সাবেক ডিজি আরও বলেন, আমরা কতগুলো বিষয় চিহ্নিত করেছি। এটা কিন্তু অন্য কমিশনের মতো নয়। এটা অন্যরকমের কমিশন। যেখানে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে চিহ্নিত করতে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা কিছু বাড়তি বিষয় চেয়েছি যার মধ্যে আমরা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তা, পরিবহন সুবিধা, সাচিবিক সুবিধা ও অফিস চেয়েছি। এই কমিশনের সভাপতির পদমর্যাদা হতে হবে একজন উপদেষ্টার সমান। কারণ তাকে দেশি-বিদেশি মানুষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তাই সমমর্যাদাত থেকে যেনো কাজ করতে পারি। পাশাপাশি কমিশনের অন্য সদস্যদের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকরে মর্যাদা চেয়েছি। এই সবগুলো হলেই আমরা পরবর্তী মিটিং ও সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করবো। প্রতিটি মিটিং শেষে যে বিষয়গুলো জানানো উচিৎ সেগুলো আমরা দেশবাসীকে জানাবো। আমরা কাউকে অন্ধকারে রেখে কাজ করতে চাই না।

বিচার প্রক্রিয়া কি হবে জানতে চাইলে কমিশন প্রধান বলেন, আমরা চারজন দেশি-বিদেশি আইন বিশেষজ্ঞকে সম্পৃক্ত কর‍তে বলেছি। বাংলাদেশের একজন সিভিল আইন বিশেষজ্ঞ, সামরিক ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ একজন পেলে ভালো হয়। দুজনকে আমরা বাংলাদেশ থেকে যুক্ত করতে বলবো। আর যেহেতু বিদেশি শক্তিকে শনাক্ত করতে হবে তাই বিষয়টা আন্তর্জাতিক হয়ে গেছে। তাই আমরা অপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ দুজনকে যুক্ত করতে আবেদন দেবো।

কমিশন গঠন করার পরপরই বিজিবির একজন সাবেক মহাপরিচালক দেশ ত্যাগের চেষ্টা করেছিলেন। এমন বিডিআর বিদ্রোহের আগে ও পরে তদন্তসহ নানা কিছুতে জড়িত ছিলো। তাদের দেশ ত্যাগের বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে আলপ করবো যদি আমরা মনে করি এই তদন্তের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে তাকে দেশে থাকতে হবে তাহলে আমরা সেই সিদ্ধান্ত নেবো।

যেহেতু বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দেশি-বিদেশি চক্রান্তের কথা বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন কোন দেশের সম্পৃক্ততা পেয়েছেন কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো দেশকে শনাক্ত করতে চাই না। আমরা নিরপেক্ষ ও নির্মোহভাবে আমরা আগাতে চাই। সেটা করতে গিয়ে যারা দালিলিক ও সারকামস্টেশিয়াল প্রমাণে যারা দায়ী হবে তখন আমরা মতামত দেবো। যেহেতু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে তার একটা অংশ আমাদের দেশের পার্টে যারা আছেন তারা এই কমিশনের জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হবেন। পাশাপাশি আপনারা যানেন ৫ই আগস্ট বিপ্লবের পর অনেকেই দেশ থেকে পালিয়েছেন। তারা যে সকল দেশে গেছেন সে সকল দেশের সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করবো। এরপর যদি নান হয় তাহলে ওই দেশে টিম পাঠিয়ে বক্তব্য নিতে আমরা টিম পাঠাবো।

আরও পড়ুন...