রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ড ও নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ড ঘিরে প্রকৃত সত্য বের করতে জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠন চেয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আবেদনটি ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রুলসহ এই আদেশ দেন।
তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির ‘গণহত্যা’ তদন্তে জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গত মাসে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। তাঁরা হলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ ও বিপ্লব কুমার পোদ্দার।
পরবর্তী সময়ে প্রকৃত সত্য বের করতে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে এবং ‘শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণায় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়ে ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রসচিব (জননিরাপত্তা বিভাগ) বরাবরে আবেদন দেন রিট আবেদনকারীরা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়ে ওই আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য ২৪ নভেম্বর দিন রেখেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন অপর আবেদনকারী বিপ্লব কুমার পোদ্দার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
রিট দায়েরের পর গত ২২ অক্টোবর আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেছিলেন, ‘তৎকালীন বিডিআরে সংঘটিত গণহত্যায় মূল পরিকল্পনাকারী ও নেপথ্যে কারা ছিল, এ বিষয়ে জাতীয়ভাবে পূর্ণাঙ্গ কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভুক্তভোগী পরিবার ও তৎকালীন সেনা কর্মকর্তারা ওই ঘটনা নিয়ে নতুন নতুন তথ্য দিচ্ছেন। কেউ কেউ বলেছেন, তদন্তে সরকার তেমন সহায়তা করেনি। এমন প্রেক্ষাপটে জনসমক্ষে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে গণহত্যা তদন্তে জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। পাশাপাশি সেনা দিবস ঘোষণার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।’
রিট আবেদনের প্রার্থনায় দেখা যায়, ওই ‘গণহত্যা’ তদন্তে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি, সেনা-পুলিশ-বিজিবির একজন করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মানবাধিকারকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সমন্বয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।