বিদেশি ঋণের প্রতি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বাড়ছে

পিবিএ,ঢাকা: বিদেশি ঋণের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় ব্যাংকের চেয়ে তুলনামূলক সুদ কম বর্তমানে বিদেশি এ ঋণের সবচেয়ে বড় উৎসে পরিণত হয়েছে ইউরোপের দেশ জার্মানি। এছাড়া বড় অংশের জোগানদাতা ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, চীন ও জাপান। বিদেশি উৎস থেকে ঋণ সংগ্রহ করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিতরণে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এর পরের অবস্থানে রয়েছে দেশীয় ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল), দি সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, এবি ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

Doller-PBA

দেশীয় ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের মাধ্যমেও ঋণ নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশীয় ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের অর্থের উৎস খতিয়ে দেখা দরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের। একই সঙ্গে বিশ্লেষকরা মতামত দিয়েছেন, সহজলভ্য বিদেশি উৎসের এ ঋণ পরিশোধে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে তা সময় সময় পরিমাপ করার এবং এসব ঋণের ব্যবহার কোথায় হচ্ছে, তাও দেখার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র অনুযায়ী, বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিতে বড় জোগানদাতা বা মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে দেশে কার্যরত বিদেশি ব্যাংকের শাখাগুলো। বর্তমানে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। অপরদিকে দেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এক্ষেত্রে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে ইবিএল, সিটি, ব্র্যাক, এবি ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

জানা গেছে, মূলত বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে আসছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। সার্ক দেশভুক্ত অন্যান্য দেশের বন্ডের মাধ্যমে এ ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেশি হলেও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা প্রধানত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকেই নিচ্ছেন বেশি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের বড় উৎসে পরিণত হয়েছে জার্মানি। দেশে আসা মোট ঋণের ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ ঋণই আসছে দেশটি থেকে। একক দেশ হিসেবে যা সর্বোচ্চ।

গবেষণায় বলা হয়, লাইবর (লন্ডনের শীর্ষ ১৫ ব্যাংকের আন্তঃলেনদেনে সুদহার) রেটের সঙ্গে তিন ও তিন দশমিক ৯ শতাংশ সুদে এসব ঋণ নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউরো ও বাংলাদেশি ব্যাংকের সুদহারে নেওয়া হয়েছে। এখন লাইবর রেট বৃদ্ধি ও টাকার বিপরীতে ডলারের দর বৃদ্ধিতে এসব ঋণ পরিশোধে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশি উৎস থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া কোম্পানির মধ্যে রয়েছে সামিট গ্রুপ, গ্রামীণফোন, রবি, প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম, নেসলে, বিএসআরএম স্টিলস, মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানি, রিজেন্ট এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার, আবুল খায়ের গ্রুপ, বেক্সিমকো প্রভৃতি।

সাধারণত বিদেশি ঋণ নেওয়া হয় লন্ডনের লাইবর রেটে। স্থায়ী ও তিন, ছয় এবং ১২ মাসের সুদের বিপরীতে শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ থেকে সাড়ে তিন শতাংশ পর্যন্ত সুদে ঋণ দেওয়া শুরু হয়েছিল। ২০১৭ সালে বিদেশি ঋণের গড় সুদ ছিল তিন দশমিক ৬০ শতাংশ। এর সঙ্গে যোগ হয় স্থানীয় ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা খরচ ও স্বল্প মুনাফা। ফলে বিদেশি ঋণের সুদহার সব সময়ই বাংলাদেশি ব্যাংকের চেয়ে কম হয়।

পিবিএ/এফএস

আরও পড়ুন...