পিবিএ,নড়াইল: মিষ্টির সৃষ্টি রস আর রস থাকলেই আমরা তাকে রসবোধ সম্পন্ন মানুষ বলি। কিন্তু রসগোল্লার রসকে আমরা কি বলবো ? মানুষ স্বভাবতই রসগোল্লা পছন্দ করে। আর সেই রসগোল্লা যদি হয় নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা দলিল লেখক অফিসের সামনে অবস্থিত চম্পক দার দোকানের। আর তার সাথে যদি যোগ হয় পুরাতন খেয়া ঘাটের সঞ্জয় দার দোকানের ক্ষিরের সন্দেশ ও দধি, তাহলে তো কথাই নেই। বিয়ে থেকে শুরু করে এমন কোন অনুষ্ঠান নেই যেখানে ওই দু’দোকানের মিষ্টি সরবরাহ করা হয় না। পরিবারের শিশু যদি কান্না কাটি করে তাহলে তার মুখে একটি রসগোল্লা তুলে দিলে তার কান্না থেমে যায়। একশত টাকার চেয়ে চম্পক দার দোকানের দুটো রসগোল্লা পেয়ে বেশি খুশি হয় আবাল বৃদ্ধ-বনিতা। কথিত আছে ওই দুদোকানের মিষ্টি ছাড়া বিয়ে সার্থক হয় না।
এই দুজন দোকানদারের মিষ্টির সুনাম এখন দেশের আনাচে-কানাচে পৌঁছে যাচ্ছে। খাঁটি গরুর দুধ জ্বালিয়ে তৈরী করা হয় ছানা। আর ওই ছানার সাথে চিনি এলাচ, দারুচিনি ও চম্পকদার হাতের ছোঁয়ায় তৈরী হয় ধবধবে সাদা রসগোল্লা। প্রতিকেজি রসগোল্লা তিনশ টাকা থেকে চারশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চম্পক দার রসগোল্লার সাথে পাল্লা দিয়ে ঘাটের সঞ্জয়দার গুড়ের সন্দেশ ক্রেতার রসনা স্বাদ বাড়িয়ে দিয়েছে বহু গুন। জন্ম, বিয়ে, সু-সংবাদ, কাউকে খুশি করতে ওই দু’দোকানের মিষ্টির জুড়ি নেই। চাকুরী, পদোন্নতি, প্রেম-বিয়ে এ মিষ্টির বদৌলতে পোক্ত হয়। মিষ্টির উপকরনের দাম বেড়ে গেলেও মিষ্টির দাম খুব একটা বাড়েনি বরং মিষ্টির গুনাগুন হয়েছে আরও আধুনিক।
পূর্ব পুরুষের পেশা হিসেবে মিষ্টির কাজ করে যাচ্ছেন এই দু’জন মিষ্টান্ন শিল্পী। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা বর্তমানে দোকানে মিষ্টি তৈরীর কারিগর (শ্রমিক) নিয়োজিত করেছেন। প্রতি দিন গড়ে ওই দু’দোকানে ৩/৪ মণ মিষ্টি বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে তাদের উৎপাদিত মিষ্টির কদর বেড়ে যায়। সঞ্জয় দার ক্ষিরের সন্দেশ খেতে চলে আসে ঢাকা সহ আশ-পাশের জেলার ভোজন বিলাসী মানুষজন। শুধু তাই নয়, ডায়াবেটিস রোগীরাও রোগের তোয়াক্কা না করে হর হামেশাই খেয়ে ফেলে সঞ্জয় ও চম্পকদার মিষ্টি। ডায়াবেটিস রোগীরা চিনির বিকল্প মিষ্টি দিয়ে তাদের খাবার যোগ্য মিষ্টি তৈরীর অনুরোধ করেছেন।
শুধু বাংলাদেশেই নয়, ওই দু’দোকানের মিষ্টি এখন বিদেশেও সমাদৃত হচ্ছে। প্রবাসীরা তাদের আতœীয়-স্বজনদের মাধ্যমে লক্ষীপাশার এ দু’দোকানে মিষ্টির স্বাদ গ্রহন করতে পিছিয়ে নেই।
এ ব্যাপারে কথা হয় সঞ্জয়ের সাথে। তিনি জানান, প্রতি কেজি ক্ষিরের সন্দেশ ৪শ’ টাকা থেকে ৪শ’ ২০ টাকা এবং শীতের সময় নলেনে গুড়ের তৈরী সন্দেশের চাহিদা থাকে বেশি। নলেনে গুড়ের তৈরী সন্দেশের দাম প্রতি কেজি ৪’শ ৮০ টাকা।
পিবিএ/ এআই/ ইএইচকে