কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র (এসি) স্থাপনের হিড়িক পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান, ডিন ও প্রাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের কক্ষে নতুন করে মোট ৩৬টি এসি স্থাপন করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে বিভিন্ন ভবন ও হলগুলোর কক্ষে এসি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ২৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য পরিবহন বন্ধ রেখে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যেই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কক্ষে এসি লাগানো নিয়ে সমালোচনা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রমতে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৯টি বিভাগে ২১টি এসি বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি করে পেয়েছে রসায়ন ও পরিসংখ্যান বিভাগ। গত জুলাই মাসে উদ্ধোধন হওয়া শেখ হাসিনা হল বাদে বাকি চার আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষের জন্য চারটি, উপাচার্যের বাংলোয় দুটি এবং বিজ্ঞান অনুষদের জন্য তিনটি এসি বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এছাড়া ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কার্যালয়, প্রক্টর, অর্থ ও হিসাব দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর, কেন্দ্রীয় মেডিকেল সেন্টার এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের জন্য একটি করে এসি বরাদ্দ দিয়েছে প্রশাসন। যদিও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কার্যালয়ের জন্য নির্ধারিত কোনো দপ্তর নেই। এর মধ্যে ২৭টির ওজন দুই টন এবং ৯টি এক দশমিক ৫ টন করে। এর মধ্যে বেশিরভাগ স্থানেই এসি স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে একাধিক শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা বলে শুক্রবারসহ তিন দিন একাডেমিক কার্যক্রম ও পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে একদিকে পড়ালেখায় যেমন ব্যাঘাত ঘটছে অন্যদিকে শহরে যারা টিউশন করেন তাদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বলেন, ‘বিদ্যুতের সংকটাপন্ন সময়ে এসি স্থাপন করে কর্তৃপক্ষ মানুষকে ভুল বার্তা দিচ্ছে। সরকার থেকে যেহেতু বলা হচ্ছে সেপ্টেম্বরে বিদ্যুতের সমস্যা কমবে, তাই কিছুদিন পরও লাগানো যেতো।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এসি স্থাপনের বিষয়ে আমার কিছুই করার নেই। আমার আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনিই ৩৬টি এসির অনুমোদন দিয়ে গেছেন। আমি শুধু অর্ডার দিয়েছি। তাও মার্চের দিকে। ওই সময়তো বিদ্যুতের সমস্যা ছিল না। এখন এসিগুলো আসছে। আসার পর তো এগুলো পড়ে থাকতে পারে না। তাই লাগানো হয়েছে।’ তবে সরকারের নিয়ম মেনেই এসি চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।