করোনাভাইরাসের সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে আরও ৭ দিন বাড়তে পারে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ। রোববার (৪ জুলাই) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। মৃত্যুর সংখ্যা এখনো একশ’র বেশি। তাই বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।’
কতদিন বাড়তে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ৭ দিন বাড়তে পারে।’
শিগগিরই বিধিনিষেধ বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনায় যে হারে মৃত্যু ও আক্রান্ত হচ্ছে, বিধিনিষেধ বাড়ানো ছাড়া সরকারের কাছে অন্য কোনো পথ খোলা নেই।’
এদিকে, মানুষের জীবনরক্ষায় বিধিনিষেধ অন্তত আরও সাতদিন বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এবারের পরিস্থিতি ভয়ানক। কারণ এবারের যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট তা অত্যন্ত ভয়ানক। যারা ভেবেছিলেন, করোনা শুধু বড়লোকদের সংক্রমিত করে, তারা এবার বুঝতে পারছেন করোনা কাউকেই ছাড়ে না। এই ভ্যারিয়েন্ট শহর-গ্রাম সর্বত্র দ্রুত ছড়ায়। এই ভয়াবহতা থেকে মানুষকে রক্ষা করতেই বিধিনিষেধ আরও সাতদিন বাড়াতে হবে।’
বিধিনিষেধ বাড়ানোর বিষয়ে গত ২৮ জুন সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এদিন সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ৭ দিন পর এই বিধিনিষেধ বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনায় রয়েছে।
এর আগে গত ২৪ জুন জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’র সুপারিশ করা হয়।
এতে বলা হয়, দেশে কোভিড-১৯ রোগের ভারতীয় ডেল্টা ধরনের সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। ইতোমধ্যে এর প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। তাই সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ এর সুপারিশ করে কমিটি।
কমিটির সুপারিশের আলোকে ২৮ জুন থেকে সরকারের তরফ থেকে কঠোর বিধিনিষেধের কথা বলা হলেও পরে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। গত ২৭ জুন ৩ দিনের সীমিত বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ২৮ জুন সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে এ বিধিনিষেধ চলে ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত।
এরপর ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। যা ৭ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর থাকার কথা রয়েছে। তবে নতুন করে ৭ দিন সময় বাড়ানো হলে ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে বিধিনিষেধ।