বিপন্ন শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদ

serdron-flower-PBA

পিবিএ ডেস্ক: এক সময় প্রাকৃতিক ভাবেই জন্ম নেওয়া শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদটিকে গ্রাম বাংলার আনাচে – কানাচে রাস্তার পাশে, খেলার মাঠে, ফসলি জমিতে প্রায়ই দেখা মিলত। কালের বিবর্তন ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদটি আজ মহাবিপন্ন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার দুর্গম সরইবাড়ি গ্রামে দেখা মিলে বিরল শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদটিকে। বাংলা নামঃ শ্বেতদ্রোণ, ফ্যামিলিঃ Lamiacaae,বৈজ্ঞানিক নামঃLeucas aspera।

এই বিপন্ন উদ্ভিদ কে আঞ্চলিকভাবে দম কলস,দন্ড কলস, দন কলস শ্বেত দ্রোণপুষ্পী, ভেষজ, ওষুধ,কানসিসা,ক্যাঁসটা, ধুলপি নামেই পরিচিত। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খাসিয়া, মনিপুরী, ত্রিপুরা, গারো, সাঁওতালদের পাশাপাশি স্থানীয় বাঙালীরাও শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদকে সবজি হিসেবে খান।

স্থানীয় কবিরাজরা শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদ দিয়ে বিভিন্ন ভেষজ ঔষধ তৈরি করেন। শ্বেতদ্রোণকে মনিপুরীরা লেম্বুম ও ধরমপুষ্প বলেনও খাসিয়া সম্প্রদায় চিয়াকুম বলেই চেনেন। শ্বেতদ্রোণের পাতা বাত রোগের ওষুধ ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসী ক্ষমতা সম্পন্ন। পাতার রস সরিয়াসিস, স্কেবিস ও চর্ম রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। শ্বেতদ্রোণের পাতা ৪ সেন্টিমিটার থেকে ৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা এবং ১ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। বৈশাখ মাসে শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদের ফুল ফুটে। শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদের অনেকগুলো কান্ড থাকে এই কান্ডের চারদিকে সাদা রঙের ছোট ছোট ফুল ফুটে। শ্বেতদ্রোণ এই উদ্ভিদের ফুলে মধু থাকে। মৌমাছি পাশাপাশি গ্রামের ছোট বাচ্চারাও এই ফুলের মধু পান করে। ফুল থেকে সবুজ রঙ্গের ফল হয় আর এই ফলের ভিতরে কালো কালো ছোট বিচি থাকে।

শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদের এই বিচি প্রাকৃতিক ভাবে গাছ থেকে ঝরে পড়ে যায় মাটিতে। পুনরায় এই মাটিতে পড়া বিচি থেকেই উদ্ভিদের উৎপত্তি হয়। শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদটিকে পূর্বে গ্রাম -অঞ্চলে সহজে পাওয়া গেলেও অনুকূল পরিবেশ না থাকার কারণে ভেষজ শ্বেতদ্রোণ উদ্ভিদটি আজ মহাবিপন্ন।

পিবিএ/এএম/এফএস

আরও পড়ুন...