বিশ্বজয়ী শাহীনের দুই শতক জমির ওপর বাড়ি ছাড়া কিছুই নেই

পিবিএ ডেস্ক: অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য শাহীন আলম। অভাবের কারণে সহ্য করেছেন অনেক কষ্ট। ১০ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে যেতেন অনুশীলন করতে। সেই শাহীন এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। খবর ইউএনবি’র।

শুক্রবার সকালে শাহীন আলমকে তার নিজ জেলা কুড়িগ্রামে উষ্ণ সংর্বধনা দিয়েছেন ক্রীড়ামোদীরা। ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম শহরে পৌঁছালে তাকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরে কলেজ মোড়ে গিয়ে বিজয় স্তম্ভে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শাহীন আলম।

এ সময় শাহীন আলম বলেন, ‘বিশ্বকাপ জয়ে দেশের সম্মান বয়ে আনায় আমি গর্বিত। আগামী দুই বছর অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে চুক্তি করেছি। সেখানে আরও ভালো করার চেষ্টা করব।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কুড়িগ্রাম জেলার সহকারী কোচ বিজন কুমার দাস জানান, শাহীনের উত্থান ২০১৬ সালে। এসময় জেলা অনূর্ধ্ব-১৬ টিমের জন্য তাকে প্রথম নির্বাচন করা হয়। এর আগে স্থানীয় কুড়িগ্রাম ক্রিকেট একাডেমির কোচ মনোজ কুমার দাস ময়নার কাছে ক্রিকেটে তার প্রথম হাতেখড়ি। এরপর ২০১৭ সালে বিকেএসপির হান্টিং দলের ক্রিকেট কোচ রুশো তাকে সেখানে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেন। সেখান থেকেই তার উত্থান। দীর্ঘদেহীর কারণে স্ট্রাইক বোলার হিসেবে তিনি শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডে জাতীয় দলের বয়সভিত্তিক গ্রুপের হয়ে সফর করেন। সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেন।

শাহীন আলমের দিনমজুর বাবা শাহাদত হোসেন ও মা সাতিনা বেগম জানান, ফাইনাল ম্যাচটি তারা দেখেছেন। অভাবের কারণে ছেলেকে তেমন একটা সহযোগিতা করতে পারেননি বলে তারা দুঃখ প্রকাশ করেন।

কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসান লোবান জানান, ছেলেটি অভাবের কারণে গ্রামের বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে এসে অনুশীলন করত। তাকে সবাই সহযোগিতা করেছে। তার যুব বিশ্বকাপ জয়ে কুড়িগ্রামবাসী ভীষণ গর্বিত।

জেলার উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা পাইকপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহাদত হোসেনের ছেলে শাহীন আলম। তিন ভাই-বোনের মধ্যে শাহীন আলম ছোট। মা সাতিনা বেগম একজন গৃহিনী। মাত্র দুই শতক জমির ওপর বাড়ি ছাড়া তাদের আর কিছুই নেই।

পিবিএ/বিএইচ

আরও পড়ুন...