বিষয়টি আমার কাছে একদম উদ্দেশ্য প্রোণোদিত মনে হলো: জায়েদ খান

পিবিএ,বিনোদন: চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাঁকে বয়কট করেছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন। বুধবার এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়। চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নির্মাণ ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন একত্রে মিলিত হয়ে ‘চলচ্চিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে শিল্পীদের পারিশ্রমিক ও দৈনন্দিন খরচ সীমাবদ্ধ করা হয়। কিন্তু চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতি এই সিদ্ধান্তকে নাকচ করে দেয়। আর এই ঘটনাতেই জায়েদ খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।

এ বিষয় জায়েদ খান বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে রাজশাহীতে রয়েছি। আমিও শুনলাম এই (বয়কট) কথা। বিষয়টি আমার কাছে একদম উদ্দেশ্য প্রোণোদিত মনে হলো। ধরেন আপনাকে যদি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় এবং জবাব দেওয়ার জন্য ৭ দিন সময় দেওয়া হয় তাহলে সেই ৭ দিন অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত আপনার বিরুদ্ধে কীভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে? তাহলে কি এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়? আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ নিয়ে সেটা ৩ দিন হলো, আমি যদি ৭ দিনেও উত্তর না দিতাম তাহলে তারা আমার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানাতে পারতো।’

চলচ্চিত্র নির্মাণ ব্যয় নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে শুটিং শুরু করতে হবে। দিনের শুটিং শুরু হবে ঠিক সকাল ১০টায়, অন্য সময় যখন শুটিং থাকবে নির্ধারিত সময়েই তা শুরু করতে হবে। শিল্পী ও কলাকুশলীদের সম্মানীর বাইরে যে যাতায়াত ভাড়া দেওয়া হয় তার পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। যাদের সম্মানী ১ লাখ টাকার ওপরে তারা কোনও প্রকার যাতায়াত ভাড়া পাবেন না।

জায়েদ খান বলছেন, ‘শিল্পীরা এই সিদ্ধান্ত মানতে চাননি। তারা এ বিষয়ে শিল্পী সমিতিতে বারবার মৌখিকভাবে বলছিল। যার ফলে আমরা গত বছরের নভেম্বরে কার্যকরী সমিতির মিটিং ডাকি সেখানে এই সিদ্ধান্তকে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তকে আমরা রেজুলেশন আকারে লিপিবদ্ধ করি। এটা সম্পূর্ণই শিল্পী সমিতির সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তকে আমি মেসেজ আকারে সব শিল্পীকে জানিয়ে দিয়েছি।’

অভিযোগ সম্পর্কে জায়েদ বলেন, ‘ব্যক্তি জায়েদ খানকে তারা বয়কট কোন যুক্তিতে করে? সিদ্ধান্ত কি ব্যক্তি জায়েদের? শিল্পীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত তারা নিয়ে নেবে? সেই সিদ্ধান্ত শিল্পীরা মানবে কি না সেটাও শিল্পীদের সংগঠনের বিষয়। কার্যকরী কমিটির ২৩ সদস্যের মধ্যে ১৯ জনের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে শিল্পীরা তাদের (প্রযোজক পরিবেশ সমিতির নেওয়া সিদ্ধান্ত) সিদ্ধান্তে কাজ করবে না। এখানে আমাকে এককভাবে টেনে আনার অর্থ কী? বয়কট করতে চাইলে শিল্পী সমিতিকে বয়কট করতে হবে।’

জায়েদ খান বলেন, ‘তারা আমাকে অনুরোধ করেছিল বিবেচনা করতে, এই নিয়ে আবার বসার কথাও ছিল। এরমধ্যেই করোনাকাল শুরু হয়ে গেল। আমি শিল্পীদের বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। পরিযায়ী শিল্পীদের খাবার যোগাতে বিভিন্নজনের দ্বারস্থ হচ্ছিলাম। যেভাবে পারছি আমি দুঃস্থ শিল্পীদের হাতে খাদ্য তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই করোনার সময় জায়েদ খানের কর্মকাণ্ড দেখে সবাই যখন প্রশংসা করছে তখন হুট করে আমার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইচ্ছে হলো। অথচ আমাদের বসার কথা ছিল এসব নিয়ে। আমি ঠিক জানি না কার ইঙ্গিতে এসব হচ্ছে।’

অর্থ আত্মসাৎ প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেন, ‘খুবই বিস্ময়কর যে ওরা যে ৬ লাখ টাকার হিসেবের কথা বলছে তা পূর্বের কমিটির। গত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনেরও আগের। তাহলে ওই কমিটি থাকার সময় তারা কেন হিসেব চাইলো না? তাহলে বুঝতে এটাও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আর হ্যাঁ তাদের হিসেব আমি দিতে যাবো এমন কোনো নিয়ম নেই, বা তারা হিসেব চাইতেও আসেনি। আমি এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট ওই ৬ লাখ টাকা ব্যয়ের হিসেব দিয়েছি। চাইলে তারা সেখান থেকে নিতে পারে হিসেব।’

শিল্পীদের মারধর, হুমকি প্রদান করেছেন এমন অভিযোগ এসেছে শিল্পী সমিতির এই নেতার বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেন, ‘প্রায়ই এই ঠুনকো অভিযোগ নিয়ে আসেন। আমি বারবার বলেছি কাউকে যদি আমি হুমকি দিয়ে থাকি মারধর করে থাকি, অন্তত তাকে সামনে আনুন। সামনে না আনতে পারলে অন্তত প্রমাণ আনুন। এসব অভিযোগের অর্থ কী হতে পারে? একজন জায়েদ খান যখন সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে তখন হিংসার বশবর্তী হয়ে তাকে চেপে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। কি আজব সিদ্ধান্ত শিল্পী সংগঠনের অথচ চেপে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে ব্যক্তি জায়েদকে।’

পিবিএ/মারুফ সরকার/এসডি

আরও পড়ুন...