পিবিএ: বিয়ের ১৩ ঘন্টা পার না হলেই ট্রেনের ধাক্কায় মর্মান্তিকভাবে নিহত সুমাইয়া-রাজন। চর ঘাটিনা গ্রামে যে বিয়ের মঞ্চে সোমবার বিকেলে বর কনে একসঙ্গে বসে একে অপরের সারা জীবনের সঙ্গী হয়েছিলেন, ঠিক সেখানেই ১৩ ঘণ্টা পর কনে সুমাইয়া ফেরেন লাশ হয়ে। হাতে লাগানো মেহেদীর রঙ না শুকানোর আগেই নিভে গেল সুমাইয়া-রাজন দম্পতির জীবন প্রদীপ।
সোমবার সন্ধ্যায় উল্লাপাড়া উপজেলার সলপ রেল স্টেশনের উত্তর পূর্ব পাশে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় কনে সুমাইয়া ও বর রাজনসহ ৯ জন মারা যান।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া কান্দাপাড়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে রাজন হোসেন উল্লাপাড়ার চর ঘাটিনা গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর শেখের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনকে বিয়ে করে মাইক্রোবাসে বাড়িতে ফিরছিলেন। সুমাইয়ার বাড়িতে তখনও চলছিল বিয়ের আমেজ। বিয়েতে আসা অতিথিরা আনন্দ করছিলেন। মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে রেল ক্রসিংয়ে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস মাইক্রোটিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় ২০০ মিটার টেনে নিয়ে যায়। এসময় সুমাইয়ার সঙ্গে যাওয়া ভাবি মমতা খাতুন, ভগ্নিপতি শরিফুল ইসলাম ও কনের ছোট বোন বুলবুলি সহ উভয় পক্ষের ৯ জনের মর্মান্তিক মৃতু হয়। পরে হাসপাতালে নেবার পর মারা যান আরো ২ জন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় সুমাইয়ার লাশ তাদের বাড়ি পৌঁছে। এসময় পরিবারের স্বজনদের কান্নায় সেখানকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। সুমাইয়ার মা মৃত মেয়ের পাশে বসে বারবার একই কথা বলছিলেন, ‘কী পাপ করছি আমরা, মেয়েটার কপালে আমার এই আছিল, আমার আর বাঁইচা থাইকা কি হইব।’
মঙ্গলবার ভোরে সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বেলা ১১টায় চর ঘাটিনা কবরস্থানে জানাজা শেষে সুমাইয়া ও তার স্বজনদের মরদেহ দাফন করা হয়।
পিবিএ/জেআই