বেরিয়া আসছে সম্রাটের রহস্যময় জীবনের চিত্র

পিবিএ,ঢাকা: চলমান অভিযানে বেরিয়া আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আওয়ামী লীগের নেতাদের বোল্ট ভেঙ্গে বের করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা, ভরি ভরি স্বর্ণ। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম সম্রাট। যুবলীগ নেতা সম্রাটের অন্যরকম জীবনের দৃশ্য।

রাজধানীতে ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
সম্রাট কোথায় এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া দুষ্কর হয়ে গেছে। কেউ বলছেন সম্রাট আত্মগোপনে রয়েছেন। কেউ বলছেন, ছয় দিন ধরে কাকরাইলের কার্যালয়েই অবস্থান করছেন এই ক্যাসিনো সম্রাট।
পুলিশ বলছে, যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে আছেন। তাকে গ্রেফতারের কাজ করছে আইনশৃংখলা বাহিনী।
জানা গেছে, শুধু দেশেই নয় সিঙ্গাপুরের সেরা কয়েকজন জুয়াড়ির মধ্যে সম্রাট অন্যতম। সেখানে তিনি ভিআইপি জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, টাকার বস্তা নিয়ে মাসে অন্তত ১০ দিন সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলতে যান সম্রাট। সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় জুয়ার আস্তানা মেরিনা বে স্যান্ডস ক্যাসিনোতে প্রথম সারির জুয়াড়ি তিনি।
ভিআইপি জুয়াড়ি হওয়ায় সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি এয়ারপোর্ট থেকে বিশেষ সম্মানের সঙ্গে রিসিভি করে বিলাসবহুল গাড়ি লিমুজিনে করে মেরিনা বে স্যান্ডস ক্যাসিনোতে নিয়ে যাওয়া হয় সম্রাটকে।
যুবলীগ দক্ষিণের নেতা আরমানুল হক আরমান, মোমিনুল হক সাঈদ ওরফে সাঈদ কমিশনার, সম্রাটের ভাই বাদল ও খোরশেদ আলমও মাঝেমধ্যে তার সফরসঙ্গী হন।
সূত্র আরও জানায়, জুয়া খেলা ছাড়াও সিঙ্গাপুরে এক চীনা বান্ধবীর সঙ্গে সময় কাটান সম্রাট। সেই নারীর নাম সিন্ডি লি বলে জানা গেছে। মেরিনা বে স্যান্ডস ক্যাসিনোতে সেই নারীকে নিয়ে যান কখনও সম্রাট।
সিন্ডি লি এর পরিচয়টি জানা যায় ২০১৮ সালের শেষদিকে। সে সময় সিঙ্গাপুরে সিন্ডি লির জন্মদিনে অংশ নেন সম্রাট। বান্ধবীর জন্য বড় আকারের একটি পার্টির আয়োজন করেন।
অন্তরঙ্গময় ছবিও তোলেন। জাঁকজমকপূর্ণ ওই পার্টিতে সম্রাটের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত যুবলীগ দক্ষিণের সহসভাপতি আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক সাঈদও উপস্থিত ছিলেন।
সম্রাটের সঙ্গে সিন্ডি লি একটি ছবি ইতিমধ্যে এখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। জানা গেছে, সিঙ্গাপুর ছাড়াও ঢাকায় ইসমাইল হোসেন সম্রাট মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব, ব্রাদার্স ক্লাব ও বনানী এলাকার গোল্ডেন ঢাকা ক্লাবের ক্যাসিনোগুলো সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন।
এছাড়া সম্রাটের হাত ধরে চলতে মতিঝিল এলাকার ফুটবল ক্লাব, আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব, সোনালী অতীত, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্যাসিনো।
ক্যাসিনো-জুয়াবিরোধী অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের অনেকেই জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন- ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার মূলে আছেন সম্রাট। তার হাত ধরেই ক্যাসিনোর প্রসার ও বিস্তার।
সম্রাটকে গ্রেফতার করতে পারলেই অবৈধ এ বাণিজ্যের আদি-অন্ত বের করা যাবে। বন্ধও করা সম্ভব অবৈধ এ ব্যবসা।
এ বিষয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, ক্যাসিনোসংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব বদ্ধপরিকর।
যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আপনাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের সহযোগিতা করতে পারেন।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...