পিবিএ,বেরোবি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’র নানাবিধ দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নবগঠিত সংগঠন ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’। বুধবার(৫ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২.৩০ ঘটিকায় ক্যাফেটেরিয়ায় অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক ড. মো. মতিউর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার দিনের পর দিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকায় ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। ৬ অনুষদের ৩ টিতে ডিন, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং উপ-উপাচার্যের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ আঁকড়ে ধরে আছেন উপাচার্য। তিনি একাই অর্ধ শতাধিক কোর্স পড়ানোর দায়িত্ব নিলেও কোনো কোর্সে পড়াননি।
কিন্তু কোর্স পড়ানো বাবদ লাখ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা, নিয়োগ বোর্ড ও আপগ্রেডেশন বোর্ডসহ অসংখ্য সভা করেন উপাচার্য। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি তার ব্যক্তিগত সংস্থা জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ) এর কাজে নিয়মিত ব্যবহার করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীকে তিনি তার নিজের বাসায় রেখেছেন। তিনি বাসায় না থাকলেও ১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন।
এছাড়া, উপাচার্যের মাকে একাধিক নিয়োগ বোর্ডের সদস্য, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের নামে নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অমানবিক আচরণ, ভর্তি পরীক্ষায় দুর্নীতি করে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠজনকে ভর্তি করানো, নিয়োগ পরীক্ষায় নিজের ইচ্ছামতো পছন্দের প্রার্থীকে মার্ক দেয়া, নিয়োগের শর্ত ভঙ্গ করে নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করাসহ নানাবিধ অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, উপাচার্য মহোদয় তার সময় কালের ৯০% সময়ই ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কাজ শুরু করার আগেই প্রায় ৫০০০০ টাকার মত পাঞ্জাবি, শাড়ি, ও অন্যান্য জামাকাপড় উপাচার্যের বাসায় স্ত্রীর কাছে থেকে কিনতে হয়, যা একদমই অশোভনীয় । এছাড়াও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাইর কাছেই জার্নাল একের অধিক বিক্রি করেন , যা নিতান্তই সবার কাছে আপত্তিকর ।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচ.এম তারিকুল ইসলাম, ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খাইরুল কবির সুমন, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল, সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনীম হুমাইদা, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম প্রমুখ।
পিবিএ/নাজমুল হুদা নিমু/বিএইচ