বেরোবির প্রশাসনিক ভবনে তালা ! দিনভর উত্তেজনা

পিবিএ, বেরোবি, রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কর্মচারীদের উপর হামলার বিচার ও তিন দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচির ১২ দিনের মাথায় প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্মচারীরা। সোমবার (৮ জুলাই) এগারোটার দিকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর প্রক্টরিয়াল বডির নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন শিক্ষক, পুলিশ-আনসার তালা ভাঙ্গতে যায়। এ সময় আন্দোলনকারীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরে বিকেল পাঁচটার পরে তালা খুলে দেওয়া হলেও আগামীকাল আবারও তালা লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

এর আগে গতকাল আন্দোলনকারীরা রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ ওই দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ও সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছে ৩ শতাধিক কর্মচারি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার(৮ জুলাই) এগারোটার দিকে কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে আন্দোলরত কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে টানা বারো দিনের মত কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে অবস্থান নেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আতিউর রহমানের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, ৪০/৫০ জন শিক্ষক, সাজোয়া পুলিশ, আনসার তালা ভাঙ্গতে যায়। সেখানে রড হাতে বহিরাগত লোককেও সেখানে দেখা যায়। এ সময় আন্দোলরত কর্মচারীদের সাথে প্রশাসনের বাকবিতন্ডা শুরু হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এ সময় মুখোমুখি অবস্থান নেয় দুই পক্ষ। এ অবস্থা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলার পর কর্মচারীরা তালা খুলে দিয়ে চলে যায়।

কর্মচারী নেতারা জানান, তালা লাগানো রেখে গেলে প্রশাসনিক ভবনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হলে আমাদের উপর দায়ভার আসবে তাই খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তালা লাগানো থাকবে যতদিন দাবি পুরণ না হবে।

কর্মচারীদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে প্রতিবাদ করে কর্মচারীরা। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে কর্মচারীদের উপর হামলা করে তালা ভেঙ্গে দেয় প্রশাসন। দীর্ঘ আন্দোলন করার পর বাধ্য হয়ে রোববার রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালের কক্ষে ও দপ্তরে তালা দেয়।
কর্মচারীদের অভিযোগ , আন্দোলন চলাকালীন সময়ে দুইবার কর্মচারীদের সঙ্গে নামমাত্র বৈঠকে বসেছিলেন প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে কিন্তু দাবনি পূরণের ব্যাপারে কোন ধরণের আশ্বাস না পাওয়ায় রোববার তালা দিতে বাধ্য হয় কর্মচারীরা।
এদিকে কর্মচারীদের দাবি পূরণের বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে আন্দোলনরত কর্মচারীদের অভিযোগ। এ অবস্থায় গত সোমবার থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবহনের গাড়িগুলো চলাচল বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনরত কর্মচারীরা। তবে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ও শিক্ষার্থী পরিবহনের বাস যথারীতি চালু আছে।

কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মাহবুবার রহমান বাবু বলেন, দাবি পূরণে শুধু আশ্বাস দিলে চলবে না। দ্রুত দাবি পূরণ চাই। নইলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম বলেন, আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে। আমাদের উপর হামলা হয়েছে। আমরা বিচার চাই।

সার্বিক বিষয়ে প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) আতিউর রহমান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে ফোন করলেও রিসিভ করেননি।

পিবিএ/ নাজমুল/হক

আরও পড়ুন...