বোয়ালমারীতে মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মামলা

পিবিএ,বোয়ালমারী: পুকুর লিজ না দেয়ায় অশীতিপর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিয়ার উপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৯ আগস্ট আব্দুল মান্নান মিয়া বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা ও তার ভাই মো. মুরাদ মোল্যা, রাকিব, আহম্মদ ও নুরুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে আসামি করে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কদমী গ্রামের আবু মোল্যার ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের বনমালীপুর গ্রামের অশীতিপর বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিয়ার একটি পুকুর দখলের উদ্দেশ্যে লিজ নেয়ার জন্য পীড়াপিড়ি করতে থাকে শীর্ষ মাদক কারবারি মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা। সে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় তাকে পুকুর লিজ দিতে অস্বীকৃতি জানায় ওই মুক্তিযোদ্ধা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৪ আগস্ট বিকেলে প্রায় ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায় সোনা মোল্যা। মুক্তিযোদ্ধা তাদের নিবৃত করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হেনস্থা করে। তখন ওই মুক্তিযোদ্ধার নাতি মো. আরিফ বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে আছমা বেগম ও পুত্রবধু মুক্তা খানম এগিয়ে গেলে তাদের কিলঘুষি মেরে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করে মিজানুর রহমানের সন্ত্রাসী বাহিনী। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আহতরা আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।

হামলার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, কদমীতে আমার একটি পুকুর রয়েছে। সেটির দখল নিতে শীর্ষ মাদক কারবারি মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা বিভিন্ন অপচেষ্টা চালায়। ব্যর্থ হয়ে পুকুরটি লিজ নেয়ার প্রস্তাব দিলে আমি অস্বীকৃতি জানালে সে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার গলায় গামছা পেঁচিয়ে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার পরিবারের লোকজন বাধা দেয়। তখন সন্ত্রাসীরা তাদের বেধড়ক মারপিট ও নারীদের শীলতাহানির চেষ্টা চালায়। আমি দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনার হোতা মিজানুর রহমান সোনা মোল্যার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার কেএম জহুরুল হক বলেন, একজন অশীতিপর বীরমুক্তিযোদ্ধার উপর ঘৃণ্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সাথে তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের জোর দাবী জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান সোনা মোল্যা মুঠোফোনে বলেন, আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে মঈনুল আমার সঙ্গে ঢাকায় ব্যবসা করতো। আমার ছেলে অসুস্থ থাকায় আমি ছেলে চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সেই সুযোগে মঈনুল প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মঈনুলের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি জিডি করেছি। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে মামলা করেছে তারা।

বোয়ালমারী থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে মামলা নেয়া হয়েছে। আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পিবিএ/খান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন/এসডি

আরও পড়ুন...