পিবিএ ডেস্ক: চীনের চিকিৎসক ইউয়ান হেরোং মাত্র ৩০ বছর বয়সেই ইন্টারনেটের কল্যাণে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। অবিশ্বাস্য পেশি বানানোর খ্যাতি পাওয়া এই চিকিৎসক জানালেন গোপন রহস্য। বললেন, ব্যায়াম করা তার ‘শখ’।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল জানায়, শারীরিকভাবে সবল হওয়ার লক্ষ্যে ইউয়ান হেরোং মাত্র দুই বছর আগে ব্যায়াম করা শুরু করেন। তিনি সপ্তাহে পাঁচ দিন ব্যায়াম করতে থাকেন। তার কঠোর ব্যায়াম অনুশীলনের ফলে দ্রুতই শরীর থেকে মেদ ঝরিয়ে ফেলতে পারেন। এসব ছবি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে দ্রুতই তার ফলোয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকে।
সুন্দর দেহের অধিকারী এ চিকিৎসক বলেন, ‘আমি শখের বশে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ব্যায়াম করি।’ ভক্তদের উদ্দেশে তিনি তার ব্যায়ামের ভিডিও তৈরি করেছেন যেখানে তাকে ভারত্তোলন, পুল আপ, মাসল স্ট্র্যাচিংসহ নানা ব্যায়াম করতে দেখা যায়। ইউয়ান হেরোং মডেলিং করেন। তিনি পেশাদার ‘বডিবিল্ডার’দের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ব্যায়াম নিয়ে তার খ্যাতি যতই বাড়ুক না কেন তিনি চিকিৎসা পেশা ছাড়বেন না বলে জানান। তিনি তার কঠিন ব্যায়ামের তালিকাও প্রকাশ করেছেন।
অনলাইন সেনসেশন ইউয়ান হেরোং চিকিৎসক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার বাবা-মা তাকে চাইনিজ কুং ফু কারাতে শেখাতে চেয়েছেন এবং যাতে ভবিষ্যতে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সেজন্য চীনের প্রথাগত চিকিৎসা শাস্ত্র পড়ান। ছুটির দিনে ফটোশ্যুট ও টিভি রেকর্ডিং করতে পছন্দ করেন হেরোং। তার স্বামীও একজন চিকিৎসক। তিনি তার স্বামীর জন্য চীনের প্রথাগত ওষুধের রেসিপি ব্যবহার করে রান্না করতে পছন্দ করেন।
অনেক সমালোচক হেরোংয়ের আচরণকে ‘অ-নারীসুলভ’ বলে সমালোচনা করেন। কিন্তু তিনি নিজেকে সমালোচকদের থেকে দূরে রাখেন। তিনি বলেন, ‘কে কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না। আমি পাত্তা দেই না। আমি ফিটনেসের প্রতি অন্ধ একজন মানুষ। আমি সুখে আছি, এটাই আসল কথা।
ইউয়ান হেরোং চীনের শানদং প্রদেশের কিংদাও শহরে প্রথাগত চীনা চিকিৎসার চর্চা করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা বিশেষ করে চাইনিজ কুং ফুর ভক্ত ছিলেন। তিনি শুরুতে চিকিৎসক না হতে চেয়ে মার্শাল আর্ট শিখতে চেয়েছিলেন বলে জানান। হেরোং বলেন,‘ আমার বাবা-মা চিকিৎসা শাস্ত্রে পড়তে বলেন যাতে করে আমার পেশাদার জীবনে কাজে লাগতে পারে।’ এরপর তিনি তার বাবা-মার পরামর্শ মতো চিকিৎসা শাস্ত্রে পড়ালেখা শেষ করেন।
যখন পড়ালেখা শেষ হয় তখন ইউয়ান হেরোং তার ইচ্ছার দিকে মন দেন। তিনি জিমে অনেক সময় দিতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইয়োগা ক্লাস শুরু করি। কিন্তু আমি বুঝতে পারি এগুলো আমার পেশি বৃদ্ধি করছে না। এরপর আমি ব্যক্তিগত প্রশিক্ষকের কাছে ব্যায়াম শুরু করি। এরপর তিনি পেশাদার বডিবিল্ডার ঝং ওয়েইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঝং ওয়েই তার জন্য বডিবল্ডিংয়ের রুটিন তৈরি করে দেন।
নিজের ব্যায়াম সম্পর্কে ইউয়ান হেরোং বলেন, ‘আমি চিকিৎসক হওয়ায় কাজ শেষ হওয়ার সময় জানা থাকে না। তারপরও আমি বিকেল সাড়ে ৫টায় কাজ শেষ করে জিমে যাওয়া শুরু করি। সপ্তাহে পাঁচ দিন জিমে যেতে থাকি, বৃষ্টি হলেও বাদ দিতাম না। এই চিকিৎসক বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ অনেক কষ্টকর হলেও আমি বাদ দিইনি। প্রশিক্ষণ অনেক কঠিন, কষ্টদায়ক ও বিরক্তিকর। তবে আমি যখন দেখি পেশি বাড়তে শুরু করেছে তখন আমি এর উপকারিতা বুঝতে পারি।
ইউয়ান হেরোং জানান, গত সেপ্টেম্বরে তিনি চীনের জাতীয় মহিলা ‘ক্লাস এ চ্যাম্পিয়নশিপ’ এ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। এ প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে চীনের বডিবিল্ডিং অ্যাসোসিয়েশন। এবার মার্শাল আর্ট শেখা শুরু করার ইচ্ছা রয়েছে চীনের প্রথাগত চিকিৎসা শাস্ত্রের চিকিৎসক হেরোংয়ের।
পিবিএ/বিএইচ