বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন

প্লাবন শুভ,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি সংলগ্ন হামিদপুর ইউনিয়নের ১২ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ ১০ হাজার ৪০০ ঘরবাড়ীর ক্ষতিপূরণের নামে হয়রানীর প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) সকাল ১১টায় জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দুই সহ¯্রাধিক বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে বড়পুকুরিয়া বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির উপদেষ্টা ও হামিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক, উপদেষ্টা লিয়াকত আলী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ওয়ার্ড মেম্বার সাইদুর রহমান, আব্দুল কাদের গ্রামবাসী লিয়াকত আলী, রুহুল আমিন ম-ল প্রমুখ।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ভূগর্ভে মাইন বিষ্ফোরণের কারণে বিকট শব্দ ও কম্পনে হামিদপুর ইউনিয়নের কাজীপাড়া, বাঁশপুকুর, মথুরাপুর, বৈদ্যনাথপুর, শিবকৃষ্ণপুর, পাতিগ্রাম, পাঁচঘরিয়া, চৌহাটি, কালুপাড়া, গোপালপাড়া, কাশিয়া ডাঙ্গা ও বৈগ্রাম মোট ১২টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার ৪০০টি ঘরবাড়ীতে ফাটল ধরছে। অনেক ঘরবাড়ী ভেঙে পড়ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে। আমরা ক্ষতিপূরণের জন্য আন্দোলন করেও সুরাহ পাচ্ছি না। আমরা ক্ষতি কর্তৃপক্ষকে ৬ দফা দাবি দিয়েছে। দাবিতে রয়েছে, সার্ভেকৃত বসতবাড়ীর ক্ষতিপূরণের টাকা দ্রুত প্রদান করা। মসজিদ, কবরস্থানসহ অধিগ্রহনকৃত জমির বকেয়া টাকা দ্রুত পরিশোধ করা। জনসাধারণের চলাচলের জন্য বৈদ্যনাথপুর থেকে বৈগ্রাম পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করণ করা। সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় যোগ্যতা অনুযায়ী ঘরঘর চাকরি প্রদান, কয়লাখনি কর্তৃক সৃষ্ট পানীয় জলের সংকট দ্রুত নিরশন করা এবং অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ বা বসবাসের অযোগ্য বসতবাড়ী ও স্থাপনা স্থায়ী সমাধান করা।

তিনি আরো বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমাদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ণ না করা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ১০ হাজার ৪০০ পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে খনির ফটকগুলো ঘেরাও করা হবে।
সংগঠনটির উপদেষ্টা ও হামিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক বলেন, খনির কারণে প্রায় ১যুগ ধরে ১২টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো সার্ভে করার পরেও খনি কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নামে টালবাহানা অব্যাহত রেখেছে। খনি কর্তৃপক্ষকে বারবার বিষয়টি অবগত করলেও তারা আমলে নিচ্ছেন না। বিষয়টি দিনাজপুর জেলা প্রশাসকেও অবগত করা হয়েছে। আমি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। আমি গ্রামবাসীদের আন্দোলনের সাথে আছি।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, খনির ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে আশপাশের এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়ে থাকে। এতে ঘরবাড়ীতে কিছু ফাটল দেখা দিতে পারে তবে দুর্বল নির্মাণ কাজের ঘরবাড়ীতে এটি বেশি দেখা দিয়ে থাকে। এলাকাবাসীর ঘরবাড়ীতে ফাটল দেখা দেওয়াসহ ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়ে সার্ভে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করেছেন। তালিকা চূড়ান্ত করে দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।

আরও পড়ুন...