
নিয়ম লঙ্ঘন শনাক্তের পর ভারতের প্রায় দুই হাজার ভিসা আবেদন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে। যা ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির বিরুদ্ধে গভীর ক্র্যাকডাউনের ইঙ্গিত দেয়।
দূতাবাস এক্সে শেয়ার করা একটি বিবৃতিতে বলেছে, কনস্যুলার টিম ইন্ডিয়া সেইসব এজেন্ট ও ফিক্সারদের চিহ্নিত করেছে, যারা আমাদের নীতি লঙ্ঘন করে প্রায় দুই হাজার ভিসা আবেদন করেছে।
দূতাবাস আরও বলেছে, আমরা এই আবেদনগুলো এখনি বাতিল করছি এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলোর সময়সূচি স্থগিত করছি। আমাদের সময়সূচি নীতি লঙ্ঘনকারী এজেন্ট ও ফিক্সারদের প্রতি শূন্য সহনশীলতা রয়েছে। এই পদক্ষেপটি প্রতারণামূলক ভিসা ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ক্র্যাকডাউনের অংশ, যার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের তদন্ত চলছে।
নয়াদিল্লির চাণক্যপুরীতে মার্কিন দূতাবাসের অভিযোগের পর ২৭ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা একটি মামলায় ২০২৪ সালের মে থেকে আগস্টের মধ্যে ভিসা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মতো রাজ্যের ৩০ জনেরও বেশি ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এফআইআর অনুসারে, অভিযুক্তরা মার্কিন ভিসা সুরক্ষিত করার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার রেকর্ড এবং কর্মসংস্থান প্রশংসাপত্রের মতো নথি জাল করার ষড়যন্ত্র করেছিল। মার্কিন কর্তৃপক্ষ ২১টি ক্ষেত্রে লক্ষ্য করেছে, যেখানে আবেদনকারীরা এজেন্ট ও নথি বিক্রেতাদের সহায়তায় মিথ্যা তথ্য জমা দিয়েছে। তদন্তকারীরা দেখেছেন, এই পরিষেবাগুলোর জন্য আবেদনকারীদের থেকে ১ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়া হয়েছিল।
চামকৌর সিং নামে একজন আবেদনকারী তার ভিসা সাক্ষাৎকারের সময় স্বীকার করেছেন যে, তিনি তার আবেদনে তালিকাভুক্ত চাকরির পদে কখনো কাজ করেননি। তিনি দাবি করেছেন, ভিসা এজেন্ট তার আবেদনে মিথ্যা বিবরণ দিয়েছে। সেইসঙ্গে তার ও তার বাবার নামে জাল ব্যাংক নথি জমা দিয়েছে।
সিং বলেন, ‘ভিসা অনুমোদিত হলে তার বাবা ১৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়েছিলেন।’
দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বিভিন্ন পরামর্শদাতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে সংযুক্ত আইপি ঠিকানাগুলো ট্র্যাক করা হয়েছে। একাধিক অ্যাপ্লিকেশন জুড়ে প্রতারণামূলক আচরণ লক্ষ করা গেছে।
এফআইআরটি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ৩১৮, ৩৩৬ ও ৩৪০ এবং আইটি আইনের ধারা ৬৬ (ডি)-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করতে অভিযান চলছে। মার্কিন দূতাবাস ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তদন্ত ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, জালিয়াতি একটি গুরুতর নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়কেই প্রভাবিত করে।