পিবিএ, ঢামেক : একবুক আশা নিয়ে হাসপাতালে দিন কাটাচ্ছেন বৃক্ষমানব আবুল বাজানদার। আগামীকাল শনিবার চিকিৎসকরা বিদেশে তার এই বিরল রোগের চিকিৎসা আছে কিনা সেই বিষয়ে জানাবেন। এজন্য শনিবারের ভালো কোনো খবরের অপেক্ষায় সময় পার করছেন বাজানদার। এর আগে তিনি ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট আর চিকিৎসা নেবেননা বলে চিকিৎসকদের জানান। সেই সাথে বিদেশে কোনো চিকিৎসা আছে কিনা সে বিষয়ে চিকিৎসকদের কাছে জানতে চান বাজানদার।
আজ শুক্রবার দুপুরে কথা হয় ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটের ৫ম তলায় ভর্তি বৃক্ষমানব খ্যাত বিরল রোগে আক্রান্ত আবুল বাজানদারের সাথে। বার্ন ইউনিটের ৫ম তলায় সিঁড়ি দিয়ে উঠেই প্রথমে চোখে পড়ে নীল চাঁদর দিয়ে ঘেরা একটি বেড। ভিতরে উঁকি দিতেই দেখা মিলে আবুল বাজানদারের। দুপুরে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। আবুল বাজানদার জানান, হাসপাতালে তার আর ভালো লাগেনা। সবসময় হৈচৈ, কান্নাকাটি লেগেই থাকে। একটু ঘুমাতেও পারের না। তাই চাঁদর দিয়ে এই আড়াল দিয়ে রেখেছেন। এটা থাকলে একটু নিরিবিলি মনে হয় তার কাছে।
তার চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে বাজানদার বলেন, ‘আমিতো এইখানে আর চিকিৎসা করাতে চাইনা সেইটা চিকিৎসকদের আগেই বলে দিয়েছি। বাইরের কোনো দেশে এর চিকিৎসা আছে কিনা, থাকলে সেখানে আমাকে চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে তাদের কাছে আবেদন করেছি। আগামী কাল শনিবার চিকিৎসকরা সেই বিষয়ে আমাকে জানাবেন। এখন অপেক্ষা করছি শনিবারের। তবে আমার মনে হচ্ছে, বাইরের দেশেও এর কোনো চিকিৎসা নাই বলেই জানাবেন চিকিৎসকরা। তবুও আশা আছি একটা ভালো খবর শুনবো। আমার ভালো চিকিৎসা হবে বিদেশে।
কথা বলার কিছুক্ষণ পরই দেখা মিললো তার মা আমিনা বেগমের। রোগীদের জন্য হাসপাতাল থেকে দেওয়া খাবার নিয়ে আসলেন তিনি। আমেনা বেগম চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, ‘খুব কষ্টে আছি বাবা। হাসপাতাল থেকে একজনের খাবার দিচ্ছে। সেই খাবারই দুইজনে ভাগ করে খাচ্ছি। বাইরে থেকে খাবার কিনে আনার মত অবস্থাও এখন নাই। এই খেয়েই কোনো মতে থাকছি।’
আলাপকালে তিনি আরো বলেন, ‘আগেরবার যতদিন হাসপাতালে ছিলাম ততদিন আমাদের জন্য একটি কেবিন দেয়া হয়েছিলো। এইবার আসার পরেও কেবিনের কথা বলেছিলাম। কেবিন খালি হলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিলো আমাদের। তবে ১৫ দিনেও কেবিন পাইনি। তাছাড়া এখানকার বাথরুমও ব্যবহার করতে পারছেনা বাজানদার। বাথরুমে ময়লা পানি জমে থাকে। আর বাজানদারের পায়ে ওই পানি লাগলেই আবার তার পায়ে দুর্গন্ধ ছড়াবে, জীবাণুও লেগে যাবে।’
পিবিএ/জিজি