ভিয়েনা সম্মেলন আমেরিকার জন্য রাজনৈতিক পরাজয়: বিশ্লেষক

পিবিএ ডেস্ক: রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভিয়েনা বৈঠকের এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দিক থেকে আমেরিকার জন্য পরাজয়। কারণ পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের নীতির প্রতি অন্য দেশগুলোর সমর্থন নেই। আমেরিকায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সংস্থার বিশেষজ্ঞ দারিয়েল কিম্বাল বলেছেন, ভিয়েনা বৈঠকে গৃহীত পদক্ষেপ চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের পক্ষ থেকে আমেরিকার জন্য চপেটাঘাত। কারণ এটা ছিল ইরান বিরোধী মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করার শামিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক কুরনিলা মির কাতার ভিত্তিক আল জাজিরা টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে ভিয়েনা বৈঠকের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইরানের প্রতিনিধিরা ইউরোপকে জানিয়ে দিয়েছেন এখন থেকে তারা একা পরমাণু সমঝোতা মেনে চলবে না। তিনি বলেন, ভিয়েনা বৈঠকের বিবৃতিতে ইরানের অর্থনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেয়া হয় যা একটি ভাল পদক্ষেপ কিন্তু ইরানের স্বার্থ রক্ষায় এখনো ইউরোপকে অনেক কিছু করতে হবে।

ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি বলেছেন, অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত পরমাণু সমঝোতা বিষয়ক যৌথ কমিশনের বৈঠক গঠনমূলক ও ইতিবাচক ছিল তবে, তা ইরানের জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ ইরানের অনেক দাবীই পূরণ করা হয়নি।

বৈঠক শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপের সঙ্গে ইরানের অর্থনৈতিক লেনদেন বিষয়ক ‘ইন্‌সটেক্স’ ব্যবস্থা চালুর কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইরানের তেল রপ্তানি স্বাভাবিক করার বিষয়টি ইউরোপকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে এবং ইরান তেল রপ্তানি করতে না পারলে ইন্‌সটেক্স খুব একটা কাজে আসবে না।

এমন সময় ভিয়েনায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হল যখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইরান ইউরোপকে ৬০ দিনের সময় বেধে দিয়েছিল। এর অন্যথায় ইরান পরমাণু সমঝোতায় উল্লেখিত দুটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করার হুমকি দিয়েছিল। পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী বিনা শর্তে ইরানের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য বহাল রাখার পাশাপাশি ইরানের তেল বিক্রি অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় চুক্তির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মোকাবেলায় ইউরোপ এখনো ইরানের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণেই ইরান ইউরোপকে দুই মাসের সময় বেধে দিয়েছিল।

পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী ইরান মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মোকাবেলায় দুটি প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়। তেহরান জানায় ইউরোপ যতদিন পর্যন্ত তাদের প্রতিশ্রুতিতে অটল না থাকবে ততদিন পর্যন্ত ইরানও চুক্তির কোনো কোনো ধারা বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত থাকবে। এ অবস্থায় গতকাল ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত যৌথ কমিশনের বৈঠক ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে ইরান জানিয়ে দেয় পরমাণু সমঝোতা রক্ষার দায়িত্ব ইরানের একার নয়।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...