পিবিএ ঢাকা: গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের সকল মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে একদিন গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্র্টাস অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান। এ সময় তিনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, এফবিসিসিআই পরিচালক ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আবদুল হক, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ে’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহিন ও ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টার চেয়ারম্যান নুরনবী শিমু।
সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘২০১৯ সালে পাঁচ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৭ হাজার ৮৫৫ জন। আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০ জন।’
একই সময় রেলপথে ৪৮২টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৯ এবং আহত হয়েছেন ৭০৬ জন। নৌপথে ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত এবং আহত ২৮২ জন। এক্ষেত্রে নিখোঁজ হয়েছে ৩৭৫ জন মানুষ।
সড়ক, রেল, নৌ-পথে মোট ছয় হাজার ২০১টি দুর্ঘটনায় আট হাজার ৫৪৩ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ৩১৮ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গত বছর পাঁচ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৮৫৫ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ১৩ হাজার ৩৩০ জন। ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ ২০১৮ সালের সমপরিমাণ হলেও প্রাণহানি বেড়েছে ৮.০৭ শতাংশ।’
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করে-
> বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো
> বিপদজনক ওভারটেকিং
> রাস্তা-ঘাটের ক্রটি
> ফিটনেসবিহীন যানবাহন
> যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা
> চালকের অদক্ষতা
> চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার
> মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো
> রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা
> রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা
> ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ
> ছোট যানবাহন বৃদ্ধি
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সুপারিশ-
> ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর কঠোর বাস্তবায়ন
> টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রসমূহে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা
> জাতীয়-আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা, ফুটপাত বেদখল মুক্ত করা
> দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন ও জেব্রাক্রসিং অঙ্কন করা
> গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা
> যাত্রী,পথচারী ও গণপরিবহনবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধিমালা প্রণয়ন
> গাড়ির ফিটনেস ও চালদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন করা।
> সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠনপূর্বক হতাহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা
> দেশব্যাপী চাহিদানুযায়ী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ নেয়া
> ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমি গড়ে তোলা
> গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের সকল মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতিমাসে একদিন গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা
> সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা
পিবিএ/এমআর