মমতার কাছে আশীর্বাদ চেয়ে মোদির দলে যশ!

পিবিএ ডেস্ক: ‘দিদি আমাকে আশীর্বাদ করবেন; আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি’ বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে সকালে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোবাইল ফোনে এই ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে অকপটে এ কথা স্বীকার করেন তিনি।

এদিকে, বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আরেক অভিনেতা হিরণও। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, বিজেপির সঙ্গে কথা হয়েছে। খুব শিগগিরই সেখানে যোগ দিচ্ছি।

একইভাবে দুই বারের বিধায়ক ও বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীও তৃণমূল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি)। বিজেপিতে যাচ্ছেন কিনা সেটা পরিষ্কার না হলেও তাকে নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে।

মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিজেপির একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হওয়ার পর ফেসবুকের পোস্ট ঘিরে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছিল অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তবে তিনি বুধবার দুপুরে নিশ্চিত করেন যে, বিজেপি নেতার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।

এদিকে দিল্লিতে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করেছেন আরএসএস প্রধান মহনভাগৎ। তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ছিলেন মিঠুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে মহাগুরুর। জল্পনা উড়ছে; তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন মিঠুন চক্রবর্তীও।

২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে পরিবর্তনের ডাক দেওয়ার সময় টালিগঞ্জের প্রচুর সংখ্যক অভিনেতা-অভিনেত্রী তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিলেন। সেই সমর্থনকারীদের মধ্যে গত দশ বছরে অনেকেই তৃণমূল থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে অরাজনৈতিকভাবে মত প্রকাশ করেছেন, অথবা তারা বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করছেন।

শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এখনও টলিপাড়ায় শক্তিধর বলেই মনে করা হয়। রাজ্যের যুবমন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের নেতৃত্বেই মূলত এককভাবে টালিগঞ্জ দখল করে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত এক দশকে তৃণমূল ঘনিষ্ঠরাই একমাত্র চলচ্চিত্র ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ পেয়েছেন। বাকিদের কাজ দেওয়া হয়নি, বিজেপিতে সদস্য হিসেবে নাম লেখানো অধিকাংশ অভিনেতা-অভিনেত্রীই এমন অভিযোগ করেছেন।

বুধবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা এই তারকাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সাড়ম্বর এক আয়োজন করা হয় কলকাতার একটি হোটেলে। সেখানে দলের শীর্ষ নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গী, মুকুল রায়, স্বপন দাশগুপ্তরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিন আরও যারা বিজেপিতে যোগ দিলেন তারা হলেন- অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী এবং সৌমিলি বিশ্বাস।

যোগ দেওয়ার পর অভিনেতা যশ বলেন, একটা পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। কেননা পরিবর্তনটা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, তার সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আজ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগেও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) আশীর্বাদ চেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন কিনা এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা দল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে রাজনীতিতে যখন যুক্ত হচ্ছি তখন নিশ্চয় মানুষের জন্য কাজ করার যে কোনও সুযোগ আসলে, সেটা করবো।

বিজেপি নেতা কৌলাশ বিজয়বর্গী বলেন, রাজ্যের মানুষ এখন পরিবর্তন চাইছেন। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ চরম আকার নিয়েছে। তৃণমূল ছাড়া কোনও সুযোগ পাওয়া যায় না। তাই সব শ্রেণিপেশার মানুষ বিজেপি পরিবারের সদস্য হচ্ছেন। যদিও সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসেও একঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রীকে নাম লেখাতে দেখা গেছে।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...