পিবিএ,ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে আলােচিত ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারাে সম্প্রদায়ের দুই কিশােরী গণধর্ষণের মামলার মূল আসামী রিয়াদকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃত হলেন সোলাইমান হোসেন রিয়াদ।
র্যাব জানায়, সীমান্তে মানববন্ধন এবং গত শুক্রবার ৭ জানুয়ারী রাজধানীর শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। বর্বরােচিত ও পাশবিক এই ঘটনা সকলকে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করেছে। র্যাব এ ঘটনার আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গােয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গােয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল শনিবার মধ্যরাতে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী সােলায়মান হােসেনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন খান এ সব কথা বলেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সে এ অপরাধ করার পর একটি মালবাহী ট্রাকে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে পরবর্তীতে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়ে আত্মগােপন করে।
তিনি বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে গণধর্ষণের শিকার হওয়া স্কুল পড়ুয়া গারাে সম্প্রদায়ের দুই কিশােরী পার্শ্ববর্তী গ্রাম এর বিবাহের অনুষ্ঠান শেষে পায়ে হেটে নিজ বাড়িতে ফিরছিলাে। এমতাবস্থায় বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা গ্রেফতারকৃত ও তার অন্যান্য সহযােগীরা দুই কিশােরীকে অনুসরণ করতে থাকে। বাড়িতে ফেরার পথিমধ্যে রাত আনুমানিক টার দিকে সময় গ্রেফতারকৃত আসামী ও তার সহযােগীদের দ্বারা ভিকটিমরা গণধর্ষণের স্বীকার হয়।
তিনি বলেন, একইসাথে ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে প্রান নাশের হুমকিও প্রদান করে ঘাতকরা। লােক লজ্জার ভয়ে এবং প্রানের নাশের হুমকির ভয়ে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি গােপন রাখে ভুক্তভােগী পরিবার। অতঃপর গত ৩০ ডিসেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে ভিকটিমের পরিবার মামলা দায়ের করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সােলায়মান হােসেন রিয়াদ এলাকায় চিহ্নিত বখাটে হিসেবে পরিচিত। সে এলাকায় ১০-১৩ জনের একটি বখাটে দলের নেতৃত্ব দিত। সে এবং তার সহযােগীদের অত্যাচারে এলাকার স্কুল পড়ুয়া মেয়েরা অতিষ্ঠ। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করারও অসংখ্য অভিযােগ রয়েছে।
র্যাব আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত সােলায়মান হােসেন রিয়াদ এর নামে হালুয়াঘাট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মাদক চোরাচালান মামলা চলমান রয়েছে। ইতােপূর্বে সে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয় এবং কারাভােগ করে। তার সহযােগী এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামীরা সংঘবদ্ধভাবে এলাকায় মাদক কারবারী এবং গ্রুপ ভিত্তিক বিভিন্ন চুরি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। এজাহারভুক্ত পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত রাজনৈতিক কোন ফোনের সঙ্গে জড়িত কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব বলেন, তার বাবাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছিলেন তবে গ্রেফতারকৃতদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপরােক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
পিবিএ/জেডএইচ