পিবিএ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া অসময়ের অতিবৃষ্টিতে আলু ছাড়াও পেঁয়াজেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে আগামীদিনে রাজ্যের বাজারে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকলেও, পেঁয়াজ নিয়ে ততটা আশঙ্কা নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এবারে মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের ব্যাপক ফলন হয়েছে। রাজ্যে চাহিদার একটা বড় অংশ পেঁয়াজ আসে মহারাষ্ট্র থেকে। ফলে রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন কম হলেও অসুবিধা নেই।
রাজ্য সরকারের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দপ্তরের সদস্য কমল দে জানান, মহারাষ্ট্র থেকে এখন প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আসছে। পাইকারি বাজারে ওই পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ৯ রুপি কেজির মধ্যে।
এ মৌসুমে এই অবস্থা থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সফর করা কমল দে বলেন, ওখানে (মহারাষ্ট্রে) কৃষকরা এখন মাত্র ৫০ পয়সা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। ওই পেঁয়াজ জমি থেকে আরতে নিয়ে আসতে কেজিতে খরচ পড়ছে এক রুপি করে।
‘তারপর বাছাই ও বস্তায় ভরতে আরও এক রুপি খরচ হয়। নাসিকের পাইকারি বাজার থেকে কলকাতার পাইকারি বাজরে পেঁয়াজ পাঠাতে কেজি প্রতি পাঁচ রুপি পরিবহন খরচ পড়ে। সব মিলিয়ে মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ কলকাতায় আনার খরচ হচ্ছে ৮ থেকে ৯ রুপির মতো। ওই পেঁয়াজ কলকাতার খুচরো বাজারে দাম পড়ে ১৫ থেকে ১৬ রুপি কেজি প্রতি।’
মহারাষ্ট্রে বছরে অন্তত তিনবার পেঁয়াজের চাষ হয়। সেখানে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখারও ব্যবস্থা আছে। পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের কোয়ালিটির পেঁয়াজের উৎপাদন অনেকটা বাড়লেও সংরক্ষণের পরিকাঠামো এখানো রাজ্যে তৈরি হয়নি।
ফলে কৃষকরা তাদের ফলন মাঠ থেকে ওঠানোর পর বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। কৃষকদের ভালো দাম পাওয়ার ক্ষেত্রে এটা বড় প্রতিবন্ধকতা। পেঁয়াজ সংরক্ষণের জায়গা নির্মাণের জন্য সরকার থেকে ভর্তুকি দেয়া হলেও তা বিশেষ কার্যকর হয়নি বলে জানায় কৃষি দপ্তর সূত্র।
ফলে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় রাজ্যে যে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়, ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে শুরু করে জুন-জুলাই মাসের মধ্যে তা শেষ হয়ে যায়। বাকি সময় পেঁয়াজের চাহিদা মেটায় মূলত মহারাষ্ট্র।
সেখানে দাম বাড়লে পশ্চিমবঙ্গেও তার প্রভাব পড়ে। মহারাষ্ট্রে ব্যাপক ফলনের জন্য আপাতত সেখানে দাম বাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পিবিএ/এইচএইচ