সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মহার্ঘ ভাতা পাবেন কি পাবেন না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারি চাকরিজীবীরা কি মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন? সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলে আর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘মহার্ঘ ভাতার বিষয়ে এখন আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।’
তাহলে কি মহার্ঘ ভাতার বিষয় থেকে সরকার সরে আসছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা কে দিলো? কে দিয়েছে ঘোষণা আমি জানি না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এলে তারপরে সিদ্ধান্ত নেবো দেবো কি দেবো না, কত (দেবো), তারপর ঘোষণা দেবো।’
এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাবনা গেছে কি না- এর উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো এখনো ঘোষণা দেইনি। আমি তো এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি।’
সম্প্রতি সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে মূল বেতনের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার খসড়া প্রস্তুত করেছিল অর্থ বিভাগ।
তবে এরই মধ্যে পাওয়া সরকারি চাকরিজীবীর বাড়তি ৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) বাদ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়। অর্থ বিভাগের হিসাবে এটি বাস্তবায়নে এক অর্থবছরে বাড়তি খরচ হবে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের খসড়া প্রস্তাবে ব্যয় কিছুটা কমাতে ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও প্রথম থেকে দশম গ্রেডের কর্মচারীদের ১০ বা ১৫ শতাংশ হারে ভাতার বিষয়টি আলোচনায় ছিল।
এ ক্ষেত্রে প্রথম থেকে দশম গ্রেডে ১০ শতাংশ দেওয়া হলে পাঁচ হাজার কোটির কিছু বেশি টাকার প্রয়োজন ছিল। আর ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ব্যয় আরেকটু বেড়ে দাঁড়াতো প্রায় ৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ এ পরিমাণ টাকার সংস্থান করে সংশোধিত বাজেটে তা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করে।
তবে সরকার এ উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই নানান মহলে সমালোচনা শুরু হয়। বিশ্লেষকরা বলছিলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ সমষ্টিক অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
এর মধ্যে গত জুলাই-আগস্টে রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে সরকারের রাজস্ব আহরণ ব্যাপক কমেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।