৪০ বছরে ৬৩ বার রক্তদান সানোয়ারের

মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য

মানুষকে ভালোবেসে যতগুলো কাজ করা যায় তার মধ্যে অন্যতম স্বেচ্ছায় রক্তদান। অনেকের ভাষায় স্বেচ্ছায় যারা রক্তদান করেন তাদের বলা হয় ‘রক্তমানব’। আবার অনেকেই বলেন রক্তযােদ্ধা বা লাল ভালােবাসাদানকারী। এরকমই লাল ভালােবাসা বিলিয়ে অন্যের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসা এক রক্তমানবের নাম সানোয়ার।

স্বার্থের জন্য এ পৃথিবীতে যখন রক্তপাত হচ্ছে প্রতিনিয়ত; ঠিক সেসময় সানোয়ার নিয়মিত নিজের লাল রক্তের ভালােবাসায় বাঁচিয়ে তুলছেন একেকটি জীবন। রক্তদানের মাধ্যমে শুধু জীবনই বাঁচাচ্ছেন না তিনি, এ
কাজ করে নিজেও পাচ্ছেন মানসিক প্রশান্তি-আত্মতৃপ্তি। সেজন্য একবার রক্তদানের পর মুখিয়ে থাকেন কখন শেষ হবে ৯০ দিন। কবে আবার রক্ত দিতে পারবেন, কবে আবার তার রক্তে আলোকিত হবে আরো একটি জীবন।

পেশায় সানোয়ার একজন ঔষধ ব্যবসায়ী। ময়মনসিংহের বাঘমারা এলাকায় জয় মেডিকেল হল নামে একটি ফার্মেসির দোকান রয়েছে তার। সোনায়ারের গ্রামের বাড়ি ত্রিশালের কানিহারি গ্রামে। ছোট বেলা থেকেই ভালো কাজের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন সানোয়ার। সর্বপ্রথম ২০০২ সালের ২৫ জানুয়ারি কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে একজন রোগীকে রক্তদানের মাধ্যমে তার রক্তদান শুরু এ পর্যন্ত মোট ৬৩ বার রক্ত দিয়েছেন। তার রক্তের গ্রুুপ ও’পজেটিভ। বর্তমান সানোয়ারের বয়স ৪০ ববছর। এত অল্প সময়ে এতবার রক্ত দেওয়া খুবই বিরল।

সানোয়ার বলেন, যখন কেউ নিজে রক্ত দিবে একমাত্র সেই বুঝতে পারবে রক্তদানের পরের অনুভূতি কেমন। প্রতিবার রক্ত দেওয়ার পর যে আত্মতৃপ্তি পাই তা থেকেই রক্ত দেওয়াটা আমার নেশা হয়েগেছে। মাঝে মাঝে এমন হয় রক্তের জন্য রিকুয়েষ্ট আসে কিন্তু আমার রক্ত দেওয়ার সময় হয়নি। তখন কেমন অসস্তি লাগে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি রক্ত মেনেজ করে দেওয়ার। যতদিন বেঁচে আছি সুস্থ আছি রক্ত দিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। আমার কাছে মনে হয় দিনশেষে প্রাপ্তি এটাই যে মানুষের জন্য কিছুটা হলেও করতে পেরেছি এটা ভেবে বুক ভরা একটা নিঃস্বাস নিতে পারবো।

লেখক- শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন...