দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানের মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ‘জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি’র উদ্যোগে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়ে।
কর্মসূচির আয়োজক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, মাহমুদুর রহমান বাংলাদেশের একজন অকুতোভয় সাহসী সাংবাদিক। তাকে অন্যায়ভাবে বিগত স্বৈরাচারী সরকার নানা ভাবে হয়রানির জন্য মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। আর তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন মডেল থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজিব অয়াজেদ জয় কে অপহরনের দায়ে তার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩৬৫ (অপহরণ এর অভিযোগ ) এবং একই আইনের ১২০ (খ) অপরাধমুলক ষড়যন্ত্র এই ২ ধারায় মামলা দেওয়া হয়। সেই মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট তাকে ২ টি ধারায় ৭ বছরের সাজা দেওয়া হয় যা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার চাইলে তার এই সাজা কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিউর এর ৪০১(১) ধারায় নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে পারত। কিন্তু তারা তা না করে তাকে জেলে পাঠিয়ে দেন। আমরা অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি। নতুবা এ দেশের ছাত্র জনতা দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
গত রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন একই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন মাহমুদুর রহমান। এ মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি তিনি।
গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁজজনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের কারাভোগ করতে হবে। এ ছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে–আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এপর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।