পিবিএ ডেস্ক: একুশ বছর বয়সে রাজনীতি শুরু করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে ২০০৩ সালে তিনি অবসরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার ভাষায়, জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সংশোধন করার জন্য তিনি আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হলেন। বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক রাষ্ট্রপ্রধান তিনি। তবে এই বয়সেও মাহাথির অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এখনো প্রতিদিন গড়ে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন বলে সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন তিনি৷ জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ডয়চে ভেলের’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সম্প্রতি ‘ইউএস কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স’ এর একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া ওই সাক্ষাতকারে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, আমি আগামী নির্বাচনের আগেই পদত্যাগ করব। কারণ অন্য প্রার্থীর জন্য রাস্তা তৈরির অঙ্গীকার করেছি আমি। এ কারণে আমার হাতে খুব বেশি সময় নেই। খুব বেশি হলেও হয়তো সর্বোচ্চ তিন বছর সময় আছে। আমি সে সময়টাকে কোনোভাবেই নষ্ট করতে চাই না। তাই আমি এখন দিনে ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করছি৷
গত বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে চার দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘পাকাতান হারাপান’ জোটের প্রধান নির্বাচিত হন তিনি। এই জোটের অন্য আরেকটি দল ছিল আনোয়ার ইব্রাহিমের ‘পার্টি কেয়াদিলান রাকায়াত’৷
আনোয়ার ইব্রাহিম একসময় মাহাথির সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সমকামিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে মাহাথিরই তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। প্রায় ছয় বছর কারাভোগ করেন তিনি।
এরপর ২০১৫ সালে একই অভিযোগে আনোয়ার ইব্রাহিমকে আবারও কারাগারে পাঠিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। ২০১৮ সালে মাহাথির ক্ষমতা গ্রহণের পর ছাড়া পান আনোয়ার।
নির্বাচনের আগে আনোয়ারের দলের সঙ্গে মিলে জোট গঠন করেছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ। আনোয়ার কারাগারে থাকায় নির্বাচনে জোট জয় পেলে মাহাথির প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে একটি অনানুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছিল। কথা ছিল মাহাথির প্রধানমন্ত্রী হলে আনোয়ারকে মুক্ত করবেন। আর দুই বছর পর তার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
তারই সূত্র ধরে গত মাসের (সেপ্টেম্বর) ১৮ তারিখ এক সাক্ষাতকারে আনোয়ার ইব্রাহিম আগামী মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা প্রকাশ করেন৷
আনোয়ারের এই বক্তব্যের সপ্তাহখানেক পর ‘ইউএস কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সয়ের’ এক অনুষ্ঠানে মাহাথির আরও তিন বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার আশা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮১ সালে তিনি প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।তার শাসনামলে মালয়েশিয়া দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়। যদিও তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কিছু অভিযোগ আছে, কিন্তু অর্থনৈতিক সাফল্য তাকে মালয়েশিয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় করে তোলে।
পিবিএ/এমএসএম