সন্তানের ওপর পিতামাতার সব ধরনের সেবা বা সদ্ব্যবহার ফরজ। সন্তানের সেবায় পিতামাতা সন্তুষ্ট হলে— মহান আল্লাহ তাআলা সন্তানের আমলনামায় হজ, ওমরাহ ও জিহাদের সওয়াব লিখে দেন।
আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি রাসুল (সা.) এর নিকট এসে বললো, আমি জিহাদে-সংগ্রামে অংশ নিতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। তখন রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন?’ লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট যুদ্ধ-সংগ্রামে যেতে না পারার অপারগতা পেশ কর। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ, ওমরাহ এবং যুদ্ধ-সংগ্রামের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো এবং মায়ের সেবা করো।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ, হাদিস : ১৩৩৯৯)
সন্তান নিজের দুঃখে, সুখে, ভালো বা খারাপ সর্বাবস্থায় যদি পিতামাতার দিকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সন্তুষ্টির নজরে থাকায়, তাহলে সন্তানের আমলনামায় কবুল হজের সওয়াব লিখে দেওয়া হয়। এমনকি সে সন্তান যদি পিতামাতার দিকে ১০০ বারও তাকায়, তার আমলনামায় ১০০ কবুল হজের সওয়াব দেওয়া হবে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সন্তান তার পিতামাতার দিকে সশ্রদ্ধ ও ভালোবাসার নজরে তাকায়, সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহপাক তার আমলনামায় একটি কবুল হজের সওয়াব লিখে দেন। এ কথা শুনে উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! সে যদি ওইভাবে দৈনিক ১০০ বার তাকায় তাহলে কি সে ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে? উত্তরে বিশ্বনবী (সা.) বললেন হ্যাঁ! যদি দৈনিক ১০০ বারও তাকায়, তাহলে সে সন্তান ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে।’ (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৭৪৭২; মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৪৯৪৪)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মা-বাবার দিকে অনুগ্রহের নজরে দেখে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সাওয়াব দান করেন।’ (বায়হাকি-মিশকাত, পৃষ্ঠা : ৪২১)