স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন এ আদেশ দেন।
এর আগে, দুপুরে একই আদালতে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে উভয়পক্ষের শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিকেলে আদেশের জন্য রেখেছিলেন আদালত। এ সময় বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও জামিনে থাকা এহতেশামুল হক ভোলা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বাবুল আক্তার। তিনি যখন ঢাকায় ছিলেন, তখন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে ৩০২, ২০১ ও ১০৯ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
পিপি মো. আবদুর রশিদ আরো বলেন, মিতুকে হত্যার জন্য কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা ও মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম বিভিন্ন সময় বৈঠক করেন। তাদের ভাড়া করে হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করেন বাবুল। পরে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তড়িঘড়ি করে নিজেই মামলা করেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরের জিইসি মোড়ের কাছে ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ঐ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন তার স্বামী তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার। মামলাটি তদন্ত করছিল নগর ডিবি পুলিশ। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই।
এরপরই ঘুরতে থাকে মামলার গতিপ্রকৃতি। পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসতে থাকে স্ত্রী হত্যার সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার নানা দিক। ২০২১ সালের ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। এরপরই তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরে ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
বাবুল আক্তার ছাড়া মামলার সাত আসামি হলেন- কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু, সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাক্কু ও শাহজাহান মিয়া।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঐ মামলায় বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে দুই হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ১০ অক্টোবর অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে আদালত। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে বাবুল আক্তার, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, শাহজাহান মিয়া ও আনোয়ার হোসেন কারাগারে রয়েছেন। জামিনে রয়েছেন এহতেশামুল হক ভোলা। এছাড়া কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা ও খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু পলাতক রয়েছেন।