‘মিথ্যা মামলা দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’

পিবিএ,ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একা নন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, তারেক রহমান সাহেব একা নন, এদেশের ১৬ কোটি গণতন্ত্রকামী মানুষ তার সাথে আছেন। সুতরাং কোনো মিথ্যা মামলা ও হুলিয়া দিয়ে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা তো বিচার বিভাগ ধংস করে দিয়েছেন। বিচার বিভাগের কোনো মর্যাদা আপনারা রাখেননি।

তিনি বলেন, এই তারেক রহমান সাহেবকে একটি মামলায় পুরোপুরি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় খালাস দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই মামলাকে আপনারা হাইকোর্ট দিয়ে আবার সাজানোর ব্যবস্থা করেছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে আপনারা তাকে সাজা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন।

দেশে কোনো আইনের শাসন নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার চুরি এবং লুটপাট করে এদেশে একটি ডাকাতের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। এই যে কোভিড-১৯ এত বড় একটি ভয়াবহ মহামারি, এই মহামারিতে আপনারা লুটপাট বন্ধ করেননি। আরো কী লুটপাট করবেন, সে জন্য ভ্যাকসিন আমদানির মাধ্যমে লুটপাটের নতুন ব্যবস্থা করছেন। যেখানে ভারত বিক্রি করছে ২ টাকা ৪০ পয়সা করে সেখানে আপনারা বিক্রি করছে ৫ টাকা করে। অর্থাৎ এই চুরির টাকা সব আপনারা নিয়ে যাবেন।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তা নতুন কোনো ঘটনা নয়। গত ১২ বছর যাবৎ তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য, শুধু জনাব তারেক রহমান না দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব গণতান্ত্রিককামী মানুষদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। আজ সে চক্রান্তের ধারাবাহিকতায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি হয়ে আছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও বহু হুলিয়া জারি করে তাকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে অর্থাৎ এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে প্রায় ১২ বছর যাবৎ এখানে একটি অত্যাচার নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করছে, এই অত্যাচার নির্যাতন মামলার হুলিয়ে দিয়ে এ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষকে দমন করে রাখা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রামী মানুষ, বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে গণতন্ত্রকে অর্জন করেছে এবং বাংলাদেশের মানুষ এবারো তাদের বুকের রক্ত দিয়ে এই গণতন্ত্রকে রক্ষা করবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তারেক রহমান সাহেবকে এত ভয় কেন? ভয়ের একটাই কারণ যে তারেক রহমান সাহেব এদেশের মানুষের যে রাজনীতি সেই রাজনীতির পতাকা তুলে ধরেছেন। যে পতাকা ১৭৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিয়ে এসেছিলেন এবং যে পতাকাকে নিয়ে এসেছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে রক্ষার মধ্য দিয়ে। আজকে সেজন্যই তারেক রহমান সাহেবকে তাদের এত ভয়।

তিনি বলেন, এই সরকার গণবিরোধী সরকার। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এরা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এদেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধংস করে দিচ্ছে। এ জন্যই এ সরকারকে সরানোর জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। আজ বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমী ও গণতান্ত্রিকামী মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এদের পরাজিত করতে হবে।

বিএনপর যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ভাইস চেয়ারম্যান ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবকদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, কৃষকদলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনুকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সস্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এছাড়াও মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ, যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, মৎস্যজীবি দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা: দেওয়ান সালাউদ্দীন বাবু, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, সাংগঠনিক সাইফ মাহমুদ জয়েল, ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুগ্ম-আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বাদল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পিবিএ/জেডএইচ

আরও পড়ুন...