মিয়ানমারে বেড়েই চলেছে লাশের মিছিল। জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে একদিনেই নিহত হয়েছেন ৩৯ জন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন দেখল মিয়ানমারের মানুষ। এতে এখন পর্যন্ত বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা শতাধিক। দু’পক্ষের সংঘর্ষে রোববার (১৪ মার্চ) রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা ইয়াঙ্গুন। হতাহতের পাশাপাশি চলে ব্যাপক ধরপাকড়। এদিকে মিয়ানমারের সেনা সরকারকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বঘোষিত বেসামরিক সরকার।
আবারও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, আবারও রক্তাক্ত মিয়ানমার। ভয়াবহ সহিংসতায় বিপর্যস্ত মিয়ানমারবাসী।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গতকাল রোববার সকাল থেকেই ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় জান্তা সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলি চালায় দাঙ্গা পুলিশ। ছোড়া হয় টিয়ার শেল। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখা যায় বেশ কয়েকজনকে। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা ইয়াঙ্গুন। চলে ধরপাকড়। আতঙ্কিত হয়ে দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন সাধারণ মানুষ। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে শহরের নিকটবর্তী এলাকাগুলোতেও।
এদিন পুলিশির বাধার মুখে সহিংস বিক্ষোভ হয় কাচিন প্রদেশের কয়েকটি শহরেও। সেখানেও বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করলে, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। এতে বেশ কয়েকজনের হতাহতের খবর জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি।
এদিকে মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত ঘোষণা দিয়েছে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত সঘোষিত বেসামরিক সরকার। শনিবার অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রকাশিত এক ফেসবুক ভিডিওতে ছায়া সরকারের প্রধান এনএলডির অন্যতম শীর্ষ নেতা মান উইন খাইং থান বলেন, বর্তমান জান্তা সরকারবিরোধী আন্দোলন ভবিষ্যতে বিপ্লবে রূপ নেবে। আগামী দিনে অভ্যুত্থানের সব পথ বন্ধ করে দেয়ার অঙ্গীকারও করেন তিনি।
অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি পার্টির (এনএলডি) নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে যারা গ্রেফতার এড়িয়ে আত্মগোপন করতে সক্ষম হয়েছেন তারা একটি নতুন গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর নাম কমিটি ফর রিপ্রেজেন্টিং পাইডাংসু লুত্তাও বা সিআরপিএইচ। মান উয়িন খাইং থান এর অস্থায়ী প্রধান নিযুক্ত হয়েছেন।
সিআরপিএইচ মিয়ানমারের বৈধ সরকার হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।