পিবিএ,ডেস্ক: মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের ওপর জল কামান ব্যবহার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকালে ধর্মঘটে অংশ নিতে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ নেপিডোয় জড়ো হয়। মান্ডালা ও ইয়াঙ্গুনেও ব্যাপক সংখ্যক মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে ।
বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যাংক কর্মকর্তা, সরকারি কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। দেশটির সর্ববৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুনের কেন্দ্রস্থল সুলে প্যাগোডা থেকে প্রায় হাজার খানেক শিক্ষক পদযাত্রা করেছেন।
নেপিডোয় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ছুড়েছে। এতে কয়েকজনের হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
অনলাইনে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় জল কামানের পানিতে ভিজে গিয়ে বিক্ষোভকারীরা চোখ ডলছেন এবং একে অপরকে সহযোগিতা করছেন।
ভিডিওটির পোস্টকারী কিয়াও জেয়ার উ বলেন, লোকজন যখন শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলেন তখন কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই দুটি জল কামান তাদের দিকে পানি ছোড়ে।
তিনি বলেন, সোমবার বিকেলে লোকজনের জড়ো হওয়া অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত রয়েছে; কিন্তু তারপরও জলকামানগুলো সরানো হয়নি। তবে বিক্ষোভে আর কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে অনলাইনে শ্রমিকদের প্রতি কাজে ইস্তফা দেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
২৮ বছরের গার্মেন্ট শ্রমিক নিন থাজিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলছিলেন, ‘আজকে একটি কাজের দিন। কিন্তু আমরা কাজে যাব না এমনকি আমাদের বেতন কাটা হলেও না।’
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সোমবার হাজার হাজার জনতা ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় জড়ো হয়েছেন। ‘স্বৈরাচারকে না বলো’ ও ‘আমরা গণতন্ত্র চাই’ লেখা খচিত ব্যানার হাতে তারা প্রতিবাদ করছেন। সু চির দল এনএলডির লাল ব্যানারের পাশাপাশি বিভিন্ন রঙের বৌদ্ধ পতাকা তারা সঙ্গে নিয়েছেন।
চাকরিজীবীদের কাজ থেকে ইস্তফা শুরু হয় গত সপ্তাহ থেকে। প্রথমে শুরু করেন চিকিৎসকরা, পরে শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীরাও এতে যোগ দিয়েছেন। সপ্তাহের শেষে এই অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করে। বিক্ষোভ দমনের উদ্দেশ্যে শনিবার সামরিক সরকার দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়। তবে রবিবারই সংযোগ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অসন্তোষ আরও বেড়ে গেছে।
২০০৭ সালে ভিক্ষুদের বিক্ষোভের পর এটিই মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভ। সে বছর ভিক্ষুদের কঠোরভাবে দমন করেছিল দেশটির তৎকালীন সামরিক জান্তা।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের সোমবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। গত নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী দল এনএলডির নেতা অং সান সু চিসহ প্রেসিডেন্ট ও সরকারের মন্ত্রীদের আটক করে রেখেছে সামরিক জান্তা সরকার।
পিবিএ/জেডএইচ