পিবিএ,ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুখে ঘা হওয়ার কারণে স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না এবং কোনো রকমে জাউ খেয়ে জীবন ধারণ করছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
বিএনপির এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার আত্মীয়স্বজন সাক্ষাত করে তার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জেনেছেন। ইনস্যুলিন ব্যবহারের পরেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না, বরং তা বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে।
শনিবার নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার বলেন, ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার মুখে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্ষতের জন্য মুখে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়েছে, যার কারণে স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া তিনি করতে পারছেন না। কোনো রকমে জাউ খেয়ে জীবন ধারণ করছেন। তিনি এরপরও রোযা রাখছেন!
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সমালোচনা করে বলা হয়, সরকারের প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন, যা শুধু অমানবিকই নয়, নিষ্ঠুর মনুষ্যত্বহীন মনেরও বহিঃপ্রকাশ।
বিএনপির সাবেক এই স্পিকার বলেন, সরকারের লোকজন শুরু থেকেই বেগম খালেদা জিয়ার যথাযথ সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করছে বলে দেশ ও বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে আসছেন, কিন্তু তার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ আজও দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপন করতে পারেনি সরকার।
এই সময় তিনি সরকারের এই আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
জমিরউদ্দীন সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে নিজ দলের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার এক পর্যায়ে বলেছিলেন যে, বেগম জিয়া কোনদিনই কারাগার থেকে বের হবেন না। তিনি দেশে এসে সেটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করছেন। ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে আদালত স্থানান্তরের এসআরও জারী করা হয়েছে। এই নির্দেশ কিসের জন্য এবং কার জন্য করা হচ্ছে তা জনগণের বুঝতে বাকি নেই।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার যাতে চরম অবনতি না ঘটে সেজন্য তাকে অবশ্যই বিশেষায়িত হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানো অত্যন্ত জরুরী মন্তব্য করে তিনি বলেন: আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাঁর পছন্দনীয় হাসপাতালে সুচিকিৎসার জোর দাবি জানাচ্ছি।
আপনাদের এমন সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য কি সরকার শুনছে?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগকে কিভাবে শোনাতে হয় তার ব্যবস্থা হবে আমাদের এক সময়। এতো চিন্তা করে লাভ নেই।
বেগম জিয়ার চিকিৎসার জন্য প্যারোলের বিষয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমরা প্যারোল চাইবো না। তিনি অসুস্থ, তার চিকিৎসা দরকার।
এই সময় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার অশুভ ও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কেরাণিগঞ্জের কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আদালত স্থাপন করছে। এমন আচরণ অমানবিক ও সংবিধানপরিন্থী।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
পিবিএ/এএইচ