‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপনের লক্ষ্যে সচিব সভা আজ

বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে উদযাপিত হতে যাচ্ছে ‘মুজিব বর্ষ’

পিবিএ,ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে ‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো আজ রোববার বসছে সচিব সভা। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে এ সভায়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে সচিবরা তাদের চিন্তা ও পরিকল্পনা শেয়ার করবেন। স্ব স্ব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মপরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে এবং জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মাদক নির্মূলসহ উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি বাস্তবায়নে নানা ধরনের নির্দেশনা দেয়া হবে এই সভায়।

আজ দুপুর ১২টায় সচিব সভা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে বেলা ১১টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী সারাদেশে উদযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

জানা যায়, সাধারণত প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত না থাকলে সচিব সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে আজকে সচিব সভা মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রস্তুতিমূলক সভা। এ বৈঠকের পর শিগগির সচিবদের সঙ্গে বসবেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে সচিব সভার প্রস্তুতির প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য গত ২০ জানুয়ারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের চিঠি দেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তাদের সেই পাঠানো প্রতিবেদন নিয়েও আজ পর্যালোচনা করা হবে।

সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। তারা যে যার কাজের বাস্তবায়ন চিত্র এবং কাজের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা তুলে ধরবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব সেসব বিষয়ে সমাধান দেবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা।

এর আগে ২০১৭ সালের ২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবদের নিয়ে সর্বশেষ বৈঠক করেন। ওই সচিব সভায় ৭১ জন সচিব অংশ নেন। সেখানে ১৬ জন সচিব বক্তব্য রাখেন। অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধসহ সচিবদের ২৬ দফা নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, সচিব সভা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রশাসনের বিশেষ প্রয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এটি আয়োজন করতে পারে। তিনি বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও মাদক নির্মূলে সরকার অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সেসব উদ্যোগের বাস্তবায়ন অগ্রগতিসহ উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করা হবে।

জানা যায়, প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ, সরকারের মেগা প্রকল্প ও ই-নথি ব্যবহারসহ সরকারি সেবা কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া যেসব উন্নয়ন কাজ এখনও শেষ হয়নি সেসব কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন, সরকারি চাকরির শূন্য পদ পূরণ ও নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সব সমস্যার কথা সচিবরা বলতে পারেন না। আবার এমন কিছু সমস্যা থাকে, যেগুলো না বললেও হয় না। তাই এ বৈঠক হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসার পূর্বপ্রস্তুতি। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার কর্মসূচিগুলো বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করে শিগগির প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সচিব সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ ও সরকারের বিভিন্ন বিশেষ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের সম্পৃক্ততা, জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতন করতে হবে। দুর্নীতির কারণে অনেক উদ্যোগ জলে যায়। দুর্নীতি থামাতে প্রধানমন্ত্রী দেশকে ডিজিটালের আওতায় এনেছেন। ই-ফাইলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক কর্মকর্তাকে এই আওতায় আনতে হবে। তাহলে সাধারণ মানুষও সঠিক সেবা পাবে। এগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে অর্থনৈতিক লক্ষ্যও অর্জন করা যাবে।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...