এম এম হেলাল উদ্দিন: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। জাতির পিতার আধুনিক বাংলাদেশ মানে বিশ্বের অন্য প্রান্তের ঝকঝকে তকতকে শহরই না। তিনি বলতেন, ‘আমি মানুষের অধিকার চাই।’ তিনি স্বপ্ন দেখতেন বাংলাদেশের মানুষও হবে উন্নত ও মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মুজিব শতবর্ষকে স্মরণীয় বরণীয় রাখতে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্য বস্ত্র ও বাসস্থানের সুব্যবস্থা করার কথা বলছেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অতন্দ্র প্রহরী জাহাঙ্গীর আলম। বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসাবে তাঁর প্রতিটি আদেশ উপদেশ মেনেই জাহাঙ্গীর আলম কাজ করেন। মুজিব শতবর্ষে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন স্বপ্নযাত্রা দৃশ্যমান হচ্ছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করার পর থেকে প্রতিটি মুহুর্ত সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নে এক অর্থবছরে সর্বাধিক প্রায় সারে ৮ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ দিয়েছেন। বছর পেরুতেই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে উন্নয়ন দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে । পুবাইল থেকে চক্রবর্তী বা টঙ্গী থেকে কাউলতিয়া সবদিকে উন্নয়নের জোয়াড়।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নের কথা বলতে প্রথমেই আসবে এর মাষ্টার প্লানের কথা। দেশে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনেই প্রথমবারের মত একটি মাষ্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পরিকল্পণা মন্ত্রনায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন মাষ্টার প্ল্যান প্রাথমিক অনুমোদন করেছে। মেয়রের ভাষ্যমতে, একটি আধুনিক সিটি কর্পোরেশন গড়ে তুলতে মুজিব শতবর্ষের অঙ্গিকার হচ্ছে মাষ্টারপ্ল্যান অনুযায়ী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে সাজানো।
প্রতিটি ওয়ার্ডের পুরাতন সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে। নতুন করে নির্মিত সড়ক কমপক্ষে ৪০ ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। সড়কের মাঝে পরিবেশ বান্ধব সড়ক বিভাজক। সেখানে সবুজ বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। সুনির্দ্দিষ্ট দুরত্বে স্থাপন করা হচ্ছে সড়ক বাতি। এসব সড়ক বাতি যখন রাতে প্রজ্জলিত হয় এলাকায় দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ ফুটিয়ে তুলে। সড়কের পাশে পায়ে হাটার ফুটপাথ বেশ প্রশস্ত।
আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা সুবিন্যস্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। আঞ্চলিক গ্রহস্থালী পানি নিষ্কাশনের জন্য সড়কের একদিকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। সেখান থেকে মূল সড়কে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। মূল সড়কের দুইদিকেই ড্রেন। এতে খুব সহজেই পানি সরাসরি নদী বা বিলে পরিবাহিত হবে। প্রাকৃতিক খাল পুনরুদ্ধার ও খনন করা হয়েছে। তুরাগ নদীকে সর্ব্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। মাষ্টারপ্ল্যান ব্যস্তবায়িত হলে তুরাগ হবে লন্ডনের টেমস।
মেয়র আবর্জনা পরিস্কার ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন শিল্প এলাকা হিসাবে অন্যান্য সিটির চাইতে বেশী জঞ্জাল বহন করে। যে কারনে মেয়র এই জঞ্জাল মুক্ত করতে আধুনিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক গার্বেজ ট্রাক আনা হয়েছে। প্রতিটি পাড়া মহল্লা থেকে আবর্জনা বহনের জন্য প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক কর্মী কাজ করছেন। সেখান থেকে স্থানীয় সেকেন্ডারী ডাম্পিংএ রাখা হয়। তারপর গার্বেজ ট্রাক মূল ডাম্পিংএ নিয়ে যায়। লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে। এখন আর মহাসড়কের পাশে কোন ময়লার ভাগার নেই। এখন এই আবর্জনাকে সম্পদে রপান্তরের কাজ চলছে। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আবর্জনা থেকে সার, বিদ্যুত ও গ্যাস উৎপাদন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে জাপানের সাথে চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। অচিরেই আবর্জন ব্যবস্থাপনা গাজীপুর সিটি হবে দেশের সবথেকে স্মার্ট সিটি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দু-একজন রয়েছেন যারা তরুণ বয়সেই অনুকরণীয় নজির গড়ছেন। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম তাদেরই একজন। সিটি মেয়র হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে নগরবাসীর প্রকৃত সেবক হিসাবে দিনরাত পরিশ্রম করছেন। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নগরবাসীর সেবক হিসাবে ভুমিকা রাখছেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বক্তৃতা বিবৃতিতে কথার ফুলঝুড়িতেই সীমাবদ্ধ নন, সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সিদ্ধহস্ত।
সাম্প্রতিক অতিতে সারাদেশে এডিস মশার বিস্তার ও ডেঙ্গু রোগে মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক। গাজীপুর সিটি মেয়র দ্রুত সিঙ্গাপুর থেকে কার্যকর ও আর্ন্তজাতিক মানের মশার প্রায় ১৪০ টন ঔষধ আমদানি করেন। গাজীপুরবাসী তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঔই ঔষধ বিলি করা হয়েছে।
তিনি প্রমাণ করলেন একজন জনপ্রতিনিধি চাইলে যে কোন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শুধুমাত্র ফটোশেসনের জন্য একদিন জনসচেতনতা অনুষ্ঠান বা র্যালিও তিনি করেননি। নিয়মত প্রতিদিন নগরের কোথাও না কোথাও এমন কর্মসূচি করেছেন।
এটাও মনে রাখতে হবে মেয়র চাইলেই সব কিছু সমাধান হবে না। যতক্ষন নাগরিক হিসাবে আমাদের সচেতনতা সৃষ্টি না হচ্ছে। আমরা নিজ দায়িত্বে বসত বাড়ি, বাড়ির ছাদ এবং আশপাশের নর্দমা পরিস্কার রাখতে পারি। আসুন একজন কর্মক্ষম মেয়রের পদাঙ্ক অনুসরণ এবং অনুকরণ করি। তবেই আমাদের নগরের পরিবেশ সুষ্ঠু, সুন্দর ও বাসযোগ্য হবে।
তাছাড়াও পানি সরবরাহ, সড়ক বাতি, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পরিবহন ব্যবস্থা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের লক্ষ্য উন্নয়নের স্বপ্নযাত্রা বাস্তবায়ন। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু।
লেখক ঃ সিনিয়র সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদ