সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: ভারতের তিহার জেলের অন্তত দেড়শ’ হিন্দু কারাবন্দি নিয়মিত রোজা রাখছেন। তারা জেলে বন্দি মুসলিম বন্ধুদের সম্মানে রোজা রাখছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকা।
সেখানকার কারারক্ষীদের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, এ বছর মুসলিম সঙ্গীদের সম্মানে হিন্দু কয়েদিদের রোজা রাখার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এবার অন্তত ১৫০ জন হিন্দু কয়েদি নিয়মিত রোজা রাখছেন। গতবছর এই সংখ্যা ছিলো ৫৯।
উল্লেখ্য, রমজান মাসের শুরুতেই ওই হিন্দু বন্দিরা জেল সুপার দের জানিয়ে দিয়েছিল, তারাও মুসলিম সহ বন্দিদের সঙ্গে রোজা রাখবেন। রোজায় বন্দিদের জন্য বিশেষ আয়োজন করা হয় তিহার কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। জেলের ক্যান্টিন থেকে সস্তায় খেজুর, রুহ আফজা শরবত কিনতে পারে বন্দিরা।
কারাগারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘তিহারের বিভিন্ন জেলে সবমিলিয়ে কারাবন্দির রয়েছে ১৬,৬৬৫ জন। এদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে কমপক্ষে ২,৬৫৮ জনই নিয়মিত রোজা রাখছেন। এবার রোজাদার কয়েদিরে সংখ্রা অন্যান্য বারের তুলনায় অন্তত তিন গুণ বেড়েছে।
চলতি বছরে রমজানে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। রোজা ভাঙার সময় প্রার্থনার জন্য মুসলিম ধর্ম গুরুদের জেলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিহার জেলের অফিসাররা জানান, হিন্দু বন্দিরা তাদের মুসলিম সহবন্দিদের প্রতি বন্ধুত্বতা ও সম্প্রতির বার্তা দিতে রোজা রাখে।
এ প্রসঙ্গে এক জেল কর্মকর্তা বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা রোজার রাখার পক্ষে নানা কারণ তুলে ধরেছেন। তবে বেশিরভাগই জানিয়েছেন, তারা মুসলিম বন্দিদের সম্মানে রোজা পালন করছেন। তবে জেলে আসার পর তারা ধর্মান্তরিত হয়েছেন কিনা সে বিষয়টি কেউই স্বীকার করতে চাননি। সাধারণত কারাবন্দিদের ৮০-৯০ শতাংশই জেলে ধর্মীয় অনুশাসন পুরোপুরি মেনে চলেন। তাদের কেউ কেউ মনে করেন যে,প্রার্থণা করলে তারা দ্রুত ছাড়া পেতে পারবে।
তিহার জেলে শুধু যে হিন্দুরাই মুসলিম বন্দিদের দেখাদেখি রোজা পালন করেন করেন এমন নয়, মুসলিম কয়েদিরাও তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে উপোস করেন। চলতি বছর নয় দিন ব্যাপী নভোরাত্রির উৎসবে হিন্দুদের সঙ্গে বহু মুসলিম কয়েদিও উপোস করেছিলেন। আর এ ধরনের ধর্মীয় সম্প্রতি কেবল যে তিহার জেলেই রয়েছে এমন নয়, ভারতের অন্যান্য জেলেও এমনটা দেখা যায়।
পিবিএ/এএইচ