ফরহাদ হোসেন, পিবিএ লক্ষ্মীপুর : বর্ষার শুরুতেই লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভেঙ্গে যাচ্ছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। উপকূলীয় হাজার হাজার মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে বসতভিটা হারিয়ে। তবুও ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা বলছেন, মন্ত্রানালয়ে জানানো হয়েছে, বরাদ্ধ পেলে দ্রুত কাজ করা হবে।
এদিকে নিজেদের ভিটামাটি রক্ষায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে উপকূলীয় বাসিন্দারা। জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৯৬ কিলোমিটার বন্যা প্রতিরোধ বেড়ি বাঁধ রয়েছে। মেঘনার ভয়ঙ্কর থাবায় ইতিমধ্যে ৩৭ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। বর্ষা না আসতে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নতুন করে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট, পাটওয়ারীরহাট, চরফলকন, মাতব্বরহাট, লুধুয়া ও রামগতি উপজেলার বাংলা বাজার, আসলপাড়া, গাবতলী ও বড়খেরীসহ ১০টি এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা।
ভাঙ্গনের ফরে হুমকির মুখে রয়েছে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, আলেকজান্ডার বাজার ও সরকারী- বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসত বাড়ি, ফসলি জমিসহ নানান গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা ও সম্পদ। বেড়ি বাঁধ রক্ষা ও ভাঙ্গন প্রতিরোধের দাবীতে প্রতিদিনই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী, মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে আসছে।
আরো জানা যায়, গত ২০১৪ সালে ৩৭ কি: মি: নদী বাঁধের প্রকল্প অনুমোদন করলেও কর্তৃপক্ষ প্রথম ধাপে ১০ বছরে মাত্র ৫ কি: মি: বাঁধ নির্মাণ করেছেন। এরমধ্যে রামগতি অংশের ৪ কি: মি: কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দিয়ে নির্মাণ করায় টিকে যায়। কিন্তু কমলনগর অংশের ১ কি: মি: কাজ ঠিকাদার দিয়ে নির্মাণ করায় তা এক বছরে ৮ বার ভেঙ্গে যায়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ২য় ধাপের কাজ শুরু হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা শুরুতে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে ঘরবাড়ি হারিয়ে রাস্তার পাশে খুপড়ি ঘর তুলে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাইতো সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন, দ্রুত বেড়ি বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করার।
কমলনগর ও রামগতি বাঁচাও মে র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার বলেন, দীর্ঘসময়ের পরে বিভিন্ন অনিয়মের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে প্রথম ধাঁপের কাজ। কিন্তু দ্বিতীয় ধাঁপের কাজ শুরু না হওয়ায় মেঘনায় ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। তাই দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ শিগ্রই শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানান। এছাড়া বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ড্যাম্পিং করে বর্ষার ভাঙ্গনের তীব্রতা থেকে রক্ষা করার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুসা বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ শুরুর বিষয়ে মন্ত্রানালয়ে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
পিবিএ/বাখ