মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন উড়ির চরের বিস্তৃর্ন জনপদ

পিবিএ,নোয়াখালী: মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে চট্টগ্রামের সন্ধীপ উপজেলার বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন উড়ির চর। দীর্ঘদিন থেকে নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে এক সমেয়র সম্ভৃদ্ধ এই জনপদ। নদী ভাঙ্গনের ফলে ভিটেমাটি হারিয়ে নি:স্ব হয়েছেন অনেকে। একমাত্র মাথা গোঁজার ঠাই হরিয়ে দিশেহারা সেখারকার বাসিন্ধারা। উড়ির চরের মানুষের জীবণ মান রক্ষায় নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত বেড়ি বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা। ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ।

সারেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে প্রায় ২৮ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে মেঘনা নদীর মোহনায় উড়ির চরটি জেগে উঠে। তখন থেকে মানুষ সেখানে বসবাস শুরু করে। বর্তমানে বাস করছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮৫ সালে ঘুর্ণিঝড় পরবর্তিতে চরবাসীকে দেখতে উড়ির চর আসেন। তিনি তখন নদী ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও দীর্ঘ ৩৫ বছরেও বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। এদিকে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ না করায় বিগত ২০ বছর যাবত বেড়েছে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা। অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে বিস্তৃর্ন জনপদ। ভিটেমাটি হারিয়ে নি:স্ব হয়েছে অনেকে। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ড বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা, ইউপি কার্যালয়, পোষ্ট অফিস সহ সরকারী বেসরকারী অনেক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা।

এদিকে ভিক্ষা নয় অধিকার চাই, নদী ভাঙ্গন রোধ চাই শ্লোগানে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উড়ির চর ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গন রোধের দাবীতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে উড়ির চর প্রবাসী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মেঘনার নদী ভাঙ্গন কবলিত স্থানে সহস্রাধিক বাস্তুহারা মানুষ এ মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন। ভাঙ্গন কবলিতরা জানায়, ২০বছর যাবত বেড়ীবাঁধ নির্মাণ না করায় ভিটামাটি সহ পৈত্রিক সম্পত্তি হারাতে বসেছে। বেড়ীবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটছে। এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। সাফায়েত উল্যাহ রাব্বীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যদের মাঝে আরোও উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহীম, মো. জাহাঙ্গীর আলম, সোহেল রানা, শামীম মাহমুদ, মাহি সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উড়ির চরের মানুষকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রনিধি ও রাজনৈতিক নেতারাও।
উড়ির চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রহিম জানান, আমরা দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত। নদী ভাঙ্গার কারণে এখানকার বাসিন্ধারা নি:স্ব ও অসহায় হয়ে পড়েছে। একেক জনের বাড়ি ঘর ৩-৪ বার নদীতে বিলীন হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত বেড়ি বাঁধ নির্মাণের দাবী জানাচ্ছি।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, সন্দ্বীপ উড়ির নিয়ে নোয়াখালীর সাথে সংযুক্ত ক্রসড্যাম নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। ইতিমধ্যে প্রকল্প মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। ক্রসড্যামটি নির্মাণ হলে উড়ির চরে আর ভাঙ্গন থাকবে বলে মনে করছেন তিনি।

ভিক্ষা নয় অধিকার চাই, নদী ভাঙ্গন রোধ চাই, স্থানীয়দের এমন মর্মস্পর্শী শ্লোগানকে গুরুত্ব দিয়ে উড়ির চরের মানুষের জীবণ, সম্পদ ও সরকারী বেসরকারী স্থাপনাগুলো রক্ষায় দ্রুত প্রদক্ষেপ গ্রহন করবে সরকার, এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

পিবিএ/ইয়াকুব নবী ইমন/এসডি

আরও পড়ুন...