পিবিএ,রাবি: করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের মেসগুলোও। ফলে টিউশনসহ অন্যান্য ছোটখাটো চাকরি হারিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে মেস বন্ধ থাকলেও ঠিকই ভাড়া দিতে হচ্ছে রাজশাহী নগরীর মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের। এতে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রায় ৩০হাজার শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের দাবি- মেস মালিকরা তাদের ভাড়া মওকুফ করুক, তবে মেস মালিকরা ভাড়া মওকুফে নারাজ। মালিকদের কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষার্থীদের পরিবারের আর্থিক দিক বিবেচনায় ভাড়া কমানো যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৭ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হল মিলে মাত্র সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার শিক্ষার্থীদের আবাসিকতার সুযোগ রয়েছে। এতে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে বাইরে ভাড়া মেসে থাকতে হয়।
মেসে থাকা রাবির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও কৃষক পরিবারের সন্তান। করোনাভাইরাসের এই সময়ে মধ্যবিত্তরা পরিবারের মানুষেরা কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। সেজন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে এই সংকটময় সময়ে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফ করা হোক। তবে অনেক শিক্ষার্থী অর্ধেক ভাড়া কমালেও তারা উপকৃত হবেন বলে জানান।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন , করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালেরর জন্য বন্ধ। এ অবস্থায় মেস মালিকদের উচিত ভাড়া মওকুফ অথবা শিথিল করা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ তুহিন বলেন, করোনার কারণে মধ্যবিত্ত ও শ্রমিক শ্রেণির অভিভাবকরা কর্মহীন। আবার টিউশনি করিয়ে মেসের ভাড়া ও পড়াশোনা বাবদ খরচ বহন করা শিক্ষার্থীদেরও আয়ের উৎস বন্ধ। মেস ভাড়া এখন আমাদের কাছে পাহাড়সম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেজন্য আমরা চাই মেস মালিকরা এমন কোনো পদক্ষেপ নেবেন যাতে উভয়পক্ষের জন্য সুবিধা হয়।
ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইয়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম কুহেলি বলেন, মেস মালিকদের মেস ভাড়া কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০শতাংশ শিথিল করার দাবি জানাচ্ছি।
তবে একেবারে সবার ভাড়া মওকুফ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মেস মালিকরা। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর ও কাজলা এলাকার মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন বলেন, অবস্থা বিবেচনায় কিছু শিক্ষার্থীর ভাড়া মওকুফ ও বা শিথিলের পক্ষে আমি । তবে সবার ভাড়া পুরোপুরি মওকুফ করা সম্ভব নয়। কারণ মেস মালিকদের অনেকের পরিবার চলে ভাড়ার টাকা দিয়ে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ভাড়া মওকুফের জন্য মেস মালিকদের সাথে কথা বলেছি কিন্তু তাদের তেমন সাড়া পাইনি। মালিকরা অনেকে বলেছেন এই ভাড়া দিয়ে অনেকের পরিবার চলে। আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের সুবিধা নিশ্চিত করে মেস মালিকদের সঙ্গে পারস্পরিক মিমাংসায় আসতে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনে রাজশাহী সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
পিবিএ/এএম