মেহেরপুরের তরুণ কৃষি গবেষক ড.মাহবুবুর রহমানের সাফল্য

সাহাজুল সাজু,মেহেরপুর: মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের ধর্মচাকী গ্রামের কৃতি সন্তান ড.মাহবুবুর রহমান। তিনি কৃষি গবেষণায় সাফল্য অর্জন করেছেন। মাহবুবুর রহমান ধর্মচাকী গ্রামের মৃত মুনতাজ আলী মাস্টারের ছেলে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র্র, রহমতপুর, বরিশাল এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান একাধারে দেশের অন্যতম গবেষক, কীটতত্ত্ববিদ, এবং নিরাপদ ফসল উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভ¦াবক।

ছাত্র জীবনরে শুরু থকেইে তনিি ছলিনে সরো শক্ষর্িাথীদরে মাঝে অন্যতম। স্বপ্ন দখেতনে একজন গবষেক হয়ে দশেরে কল্যাণে নজিকেে নয়িোজতি করবনে। তাঁর স্বপ্ন সত্যি হয় ২০০৭ ইং সাল।ে চার বছররে অর্নাস শষেে বাংলাদশে কৃষি বশ্বিবদ্যিালয়রে কৃষি অনুষদ থকেে বএিসসি ইন এগ্রকিালচারাল বিষয়ে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়। ২০০৯ সালে একই অনুষদরে কীটতত্ত্ব বষিয়ে এমএসসতিে প্রথম বভিাগে প্রথম স্থান র্অজন করনে।

২০১১ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এ যোগদানের পর দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিরাপদ সবজি, ফল, পান ও ডাল ফসল উৎপাদনে পোঁকামাকড় দমনের উপর কৃতিত্বের সাথে গবেষণা চালাতে থাকেন।

যার স্বীকৃতিস্বরুপ ২০১৩ সালে বিশ্বের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ দক্ষিণ কোরিয়ার আন্দং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি করার আমন্ত্রণ পান এবং কোরিয়ার প্রেস্টিজিয়াস ব্রেন কোরিয়া (বিকে ২১ প্লাস) এর বৃত্তি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াতে পিএইচডি এর গবেষণা সম্পূর্ণ করেন। ২০১৬ সালে অ্যাপ্ল্যাইড এন্টোমোলজি বিষয়ে সাফল্যের সাথে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তাঁর গবেষণার ০৬ টি প্রবন্ধ পৃথিবীর বিখ্যাত ০৫ টি আন্তর্জাতিক এসসিআই জার্নালে প্রকাশিত হয়। উক্ত গবেষণামূলক নিবন্ধের জন্য তিনি এক্সিলেন্ট স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। দক্ষিণ কোরিয়াতে গবেষণার সময় ২০১৪ ও ২০১৫ সালে এন্টোমোলজিকাল স্যোসাইটি অব আমেরিকা এর আমন্ত্রনে তার গবেষণার প্রবন্ধসমূহ কৃতিত্বের সাথে আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য কনফারেন্সে উপস্থাপন করে স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

এছাড়াও কোরিয়ান সোসাইটি অব অ্যাপ্ল্যাইড এন্টোমোলজি এর আমন্ত্রণে তার গবেষণার প্রবন্ধসমূহ কৃতিত্বের সাথে উপস্থাপনের জন্য ২০১৬ সালে কোরিয়াতে বেস্ট স্টুডেন্ট প্রেজেন্টেশন অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন।

উল্লেখ্য যে পিএইচডি ডিগ্রি শেষে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টোরালের আমন্ত্রণ পান কিন্তু পারিবারিক ও বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতার কারণে যোগদান না করে ২০১৬ সালে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র্র, রহমতপুর, বরিশালে যোগদান করেন।

তখন থেকে অদ্যাবধি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষকৃত সবজি, ফল, পান ও ডাল ফসলের পোঁকামাকড় দমনে নিরাপদ টেকশই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষে সাফল্যের সাথে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিশেষ করে বিষমুক্ত নিরাপদ পান উৎপাদনের জন্য যুগান্তকারী সময়পোযোগী গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

যার স্বীকৃতিস্বরুপ সম্প্রতি তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে “বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষকৃত গুরুত্বপূর্ণ ফল, পান, সুপারি ও ডাল ফসলের পোঁকামাকড় সনাক্তকরণ ও সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তার কর্মসূচী” এর পরিচালক হিসাবে কৃষি মন্ত্রনালয় থেকে নিয়োগ পেয়েছেন।

এছাড়াও বর্তমানে তিনি “ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ” প্রকল্পের মনিটরিং ও পরিবীক্ষণ কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভাসমান বেডে চাষকৃত সবজি ও মসলা ফসলের পোঁকামাকড় দমনের জন্য জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক নিরাপদ টেকশই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের যুগোপযোগী গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি ২০১৯ সালে ১৫ দনি ব্যাপি নেদারল্যান্ডস এর ওয়াগেনিজেন ইউনিভার্সিটি এন্ড রিসার্স এ অনুষ্ঠতিব্য “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ভাসমান কৃষির পোঁকামাকড়ের উন্নত দমন ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক শিক্ষা সফরে অংশগ্রহণ করেন। সম্প্রতি তিনি কচুর ১ টি উন্নত জাত, দক্ষিণাঞ্চলে মুগ ফসলের ফুলের পোকাসমূহের দমন ব্যবস্থাপনা ও আকর্ষণ ও মেরে ফেলা পদ্ধতির মাধ্যমে কুমড়া জাতীয় ফসলের মাছি পোকা দমন ব্যবস্থাপনা শীর্ষক প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কার্যকরী ভূমিকা রাখেন।

তার গবেষণার ১৩ টি প্রবন্ধের মধ্যে ০৬ টি বিভিন্ন বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নাল ও ০৭ টি দেশীয় জার্নালে প্রকাশ হয়। এছাড়াও ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা ফসলের পোকামাকড় দমনের উপর ৪ টি ফ্যাক্টশীট প্রণয়ন করেন। তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহ দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা ব্যবহার করে ফসলের পোঁকামাকড় খুব সহজেই কম খরচে পরিবেশ সম্মত উপায়ে দমণের মাধ্যমে নিরাপদ বিষমুক্ত ফসল ঘরে তুলছে যা বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন।

তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে টেকসই পোঁকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে নিরাপদ পুষ্টি সমৃদ্ধ ফসল উৎপাদনে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
পিবিএ/সাহাজুল সাজু/এএম

আরও পড়ুন...