
সৎ মা নিশি ইসলামের করা মামলায় অভিনেত্রী ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) আদালত সূত্রে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি জানা যায়। একই মামলায় সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের সাবেক এডিসি নাজমুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গতকাল ২২ এপ্রিল ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহ তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
জানা যায়, গত ১৩ মার্চ শাওনের সৎ মা নিশি ইসলাম হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে ১২ জনকে আসামি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলায় দায়ের করেন। ওইদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন এবং উপয়পক্ষের উপস্থিতির জন্য ২২ এপ্রিল ধার্য করেন।
আসামিরা হলেন, ইঞ্জিনিয়ার মো. আলী, মেহের আফরোজ শাওন, তার ভাই মাহিন আফরোজ শিঞ্জন, সেঁজুতি, সাব্বির, এডিসি নাজমুল, সুব্রত দাস, মাইনুল হোসেন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপ-পরিদর্শক শাহ আলম এবং মোখলেছুর রহমান মিল্টন।
এর মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও উপ-পরিদর্শক শাহ আলম গতকাল আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করে বাকি ১০ আসামি আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শরিয়া মোতাবেক ৫০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে এবং এরমধ্যে ৫০ হাজার টাকা উসুল করে আসামি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী তার আগের স্ত্রীর কথা গোপন রেখে, ও প্রতারনা করে, প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে নিয়ে বাদীকে বিয়ে করেন। তিনি পরবর্তী সময়ে জানতে পারেন মো. আলী আগেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন, যা তিনি গোপন করেন। তার আগের একটি পুত্র ও তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের বিষয়টি জানতে চাইলে সে তার প্রথম বিয়ে সম্পর্কে জানাতে বিভিন্ন রকমের ছলনা ও প্রতারণাব আশ্রয় নেয় এবং তার সকল প্রতারণার কথা স্বীকার করেন।
পরবর্তী সময়ে ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি শাওনের বোন শিঞ্জন ও তার স্বামী সাব্বির বাদীর বাড়িতে এসে বিয়ের সম্পর্ক গোপন রাখার জন্য হুমকি দেয় বলেও উল্লেখ করে মামলার অভিযোগে বলা হয়, এরপর ৪ মার্চ আসামি মো. আলী নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে বাদীকে গুলশানের বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন। তখন তার পূর্বের স্ত্রীকে দেখে আসামির প্রতারণার বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পান। এসময় অন্যান্য আসামিরা তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন।
অভিযোগে বলা হয়, পরদিন আবারও শাওন ও এডিসি নাজমুলসহ অন্য আসামিরা বাদীর বাড়িতে ঢুকে সাদা কাগজে সই নেওয়ার চেষ্টা করে। সই দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় শাওন তাকে বেধড়ক মারধর করে। এর ফলে তিনি অজ্ঞান হয়ে গেলে আসামিরা পালিয়ে যায়। এরপর ওই বছরের ২৪ এপ্রিল বাদীকে ডিবির অফিসে ডেকে নেন ডিবি পরিদর্শক শাহ জালাল। সেখানেও শাওনসহ অন্যান্য আসামিরা মারধর করেন। এসময় ডিবি প্রধান হারুন বাড্ডা থানার ওসিকে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা নিতে বলেন। পরে এ মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে এবং মাদক ব্যবসায়ী সাজায়।