পিবিএ, ঢাকা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রিসালদার মোসলেউদ্দিন পরিচয় গোপন করে রফিকুল ইসলাম খান নামে পালিয়ে বেরাচ্ছিল।
এই নামেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা আত্মগোপন করে ছিল।
মোসলেম উদ্দিন ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর নরসিংদী জেলার শিবপুরের দত্তেরগাঁও এলাকায় বাড়ি করে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন। ’৯৬ সালের আগ পর্যন্ত কোনো সরকারই মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্তের উদ্যোগ নেয়নি।
জানা গেছে, এমনকি বিএনপি সরকারের সময় তার বাড়িতে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তা থাকত। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত শুরু হলে তার বাড়িসহ বেশকিছু সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। একপর্যায়ে খুনি রিসালদার মোসলেউদ্দিন পালিয়ে যান। তার পরিবারের সদস্যরাও দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন। অনেকেই নিরাপদ স্থানে গা ঢাকা দেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামিদের কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কয়েক বছর পর তাদের জন্য পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে আসে।
এ সুযোগে মোসলেউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা ফের নরসিংদী এলাকায় ফিরে আসেন। কিন্তু এবার মোসলেম উদ্দিনের ৫ ছেলে ও এক মেয়ের সবাই কৌশলে পিতার নাম বদলে নিতে সক্ষম হন। জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে সরকারি সব ধরনের কাগজপত্রে তাদের পিতার নাম হয়ে যায় রফিকুল ইসলাম খান।
নতুন পরিচয়ে তারা সমাজের মূল ধারায় মিশে যান খুব সহজে। চাকরি ও ব্যবসা- বাণিজ্য শুরু করেন নতুন করে। মোসলেম উদ্দিনের বড় ছেলে সাজিদুল ইসলাম খান নরসিংদী শহরের টাউন হল মোড়ে হোটেল ব্যবসা করছেন। ২য় পুত্র শফিকুল ইসলাম খান চাকরি নেন জেনারেল ফার্সাসিটিক্যালস কোম্পানিতে।
৩য় ছেলে মাহমুদুল ইসলাম খান সিনিয়র আরএসম পদে চাকরি পান অ্যালকো ফার্মাসিটিক্যালসে। ৪র্থ পুত্র মজিদুল ইসলাম খান পরিবারিক সম্পত্তি দেখাশোনা করেন এবং পঞ্চম পুত্র মহিদুল ইসলাম খান নদী কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন উঁচু পদে। মোসলেউদ্দিনের একমাত্র মেয়ে সানাজ খানের বিয়ে হয় নরসিংদীতেই। তার স্বামী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এখন দক্ষিণ কারারচর মৌলভী তোফাজ্জল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
পিবিএ/মোআ
