
রাজধানীর মোহম্মদপুরের ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম প্রধান সহযোগী সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মোঃ বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবু এবং কব্জিকাটা আনোয়ারের অন্যতম প্রধান সহযোগী মোঃ রফিকুল ইসলাম রানা ওরফে রিফাত ওরফে রাফাতসহ ০৮ জন সদস্যকে মাদক ও বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) র্যাব-২ এর সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা ও সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খান আসিফ তপু গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব-২ এর অভিযানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা হতে জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী ভূইয়া সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেল, মাদক ব্যবসায়ী চুয়া সেলিম গ্রুপের প্রধান মোঃ সেলিম আশরাফী ওরফে চুয়া সেলিম ওরফে চোরা সেলিম এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর প্রধান মোঃ আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারকে তাদের সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায়, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রিক সকল সন্ত্রাসী গ্রুপের মূল উৎপাটন করার লক্ষে র্যাব-২ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহম্মদপুরের ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম প্রধান সহযোগী সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মোঃ বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবু (৩১) ও কব্জিকাটা আনোয়ারের অন্যতম প্রধান সহযোগী মোঃ রফিকুল ইসলাম রানা ওরফে রিফাত ওরফে রাফাত (২৭) ও ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর ০৬ জন সদস্য ১) সাকিব মৃধা (২২), ২) মোঃ রিয়াজ সরদার (২১), ৩) মোঃ শাকিল (২৫), ৪) মোঃ মনিরুল হাসান ওরফে গুটি হাসান (২৫), ৫) মোঃ সুমন হক (২৪) ও ৬) মোঃ লামিম (২০)দেরকে ইয়াবা, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও নগদ অর্থসহ ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর ও মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২।
উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ০৪টি সামুরাই, ০৪ টি চাপাতি, ০২টি ছুরি, ০২ টি চাইনিজ কুড়াল, ০২ টি হাতুড়ি, ৪৫০ পিচ ইয়াবা, নগদ ৬,৭৬,৯০০/-(ছয় লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার নয়শত) টাকা, ০১ টি মাদকদ্রব্য পরিমাপ করার ডিজিটাল স্কেল, ১৩ টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এন্ড্রয়েড মোবাইল ও ০৪ টি বাটন মোবাইল।
গ্রেফতারকৃত ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম প্রধান সহযোগী সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মোঃ বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সে ও তার গ্যাংয়ের লোকজন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত টুন্ডা বাবু মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের নিয়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে শ্যামলী হাউজিং ২ নং প্রজেক্টে টুন্ডা বাবুকে সামুরাই ও ছুরি হাতে কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের সাথে নিয়ে শোডাউন করতে দেখা যায়। এসংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। প্রকাশ থাকে যে, টুন্ডা বাবুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যাচেষ্টা ও ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ রফিকুল ইসলাম রানা ওরফে রিফাত ওরফে রাফাত জানায়, ঢাকায় সে গাড়ীর হেলপার হিসেবে কাজ করে। পরবর্তীতে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার সময় আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত হয়। সে কব্জিকাটা আনোয়ারের নির্দেশে মোহাম্মদপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন সস্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধে ০৫টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায় এবং সে বিভিন্ন মেয়াদে একাধিকবার কারাভোগ করে। সাধারণত দিনের বেলায় তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় কম জনসমাগমপূর্ণ স্থানে পথচারীদের জিম্মি করে নগদ অর্থ, মোবাইল, ল্যাপটপ, ভ্যানিটি ব্যাগ ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে এবং রাত গভীর হলেই বাসা বাড়ি, ফ্লাটে ও গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুটে নেয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে যা যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
উপরোক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।