পিবিএ, জাকির হোসেন রাজু,সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় তরমুজ চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে চাষীরা। এ উপজেলায় চলতি বছর তরমুজের ভাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি তরমুজ চাষিরা। চলতি বছর তরমুজ চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলানো যাবে বলে জানিয়েছে কৃষকরা। তরমুজের ভাম্পার ফলন হওয়ার জেলা সদরের সাথে এ উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার কারণে ন্যায মূল্যে তরমুজ বিক্রি করছেন বলে জানান চাষিরা।
পাহাড়ী ঢলে জমি গুলোতে পলি পড়ার কারণে এ বছর যাদুকাটা নদীর তীরসহ ছোট-বড় কয়েকটি হাওরে তরমুজের চাষ করে ভাম্পার ফলন পেয়ে চাষিদের চোখে মুখে যেন নতুন স্বপ্ন ফুটে উঠছে। যাদুকাটা নদীর পূর্ব তীরসহ পুরো হাওর জুড়ে চোখ জুড়ানো সবুজ ঘাসের বুকে এ যেন আল্লাহ্ নিজের হাতে গড়ে সাজিয়ে রেখেছে তরমুজের সারি,মনে হয় তরমুজের নিরব মিছিল।
তরমুজ চাষি নিজাম উদ্দিন জানান, এবার ৯০ কিয়ার (৩০শতকে এক কিয়ার)জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। প্রতি কিয়ার জমিতে তরমুজ চাষে ব্যয় হয়েছে পাঁচ-সাত হাজার টাকা,আর প্রতি কিয়ারে উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করে পাচ্ছি ২০-২৫ হাজার টাকা। আর যোগাযোগ্য ব্যবস্থার উন্নিতি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা জমিতেই ট্রাক নিয়ে আমাদের কাছ থেকে তরমুজ কিনে নেওয়ায় আমাদের আর খরচ করে বাজারে যেতে হয় না। এ পর্যন্ত সাত লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পেরেছি। এ বছর আশা করি অর্ধকোটি টাকার বেশি তরমুজ বিক্রি করতে পারব।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়-উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঢালারপাড়,লামাশ্র,জঙ্গালহাটি, বিন্নাকুলি, মোদেরগাঁও, ছড়ারপার ও করিমপুর এলাকাকে ঘিরে জাঙ্গাল ও বুরবুরিয়া হাওরে ৩৮৫হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করেছে। দেশে বিভিন্ন জেলার তরমুজ চাষীদের বাজারজাতের পূর্বেই তাহিরপুরের তরমুজ চাষীরা সফল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে
। গত ২০ জানুয়ারী হতে জাম্বু, ওরিয়ন,বাংলালিংকও ড্রাগন জাতীয় বিদেশী তরমুজ বাজারে ছেড়েছে।স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তরমুজ রোপন ও ফলনের সময় টিএসপি,এমওপি,সুপার জিপ সাম সার ফলনের পর জিংক মনো,ছত্রাক নাশক,মাকড় নাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করে ছিলেন। সময়মত হাইব্রীট জাতীয় বীজ পাওয়ায় পূর্বের চেয়ে ফলন বেশি হয়েছে।
তরমুজ চাষি নজরুল ইসলাম বলেন,এ বছর ১৮কেয়ার জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এবছর কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সঠিক পরামর্শ পাওয়ায় ও তরমুজে তেমন কোন রোগ বালাই না থাকায় এবং ভাল ফলন হওয়ায় খরছ বাদেও আমার প্রচুর টাকা লাভ হবে।
তাহিরপুর উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, কৃষকরা সময় মত নানান জাতীয় হাইব্রিট বীজ পাওয়া,প্রাকৃতিক কোন রুপ প্রতিবন্ধকতা না থাকায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুছ ছালাম জানান, কৃষকদের খরচ বাদ দিয়েও তারা দ্বীগুণ লাভবান হবেন। আমাদের জনবল সংকট রয়েছে তারপরও আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্নক চেষ্টা চলছে কৃষির ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা অর্জন করার জন্য।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-উপজেলায় তরমুজের ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকদের সুবিধা ও আরো ভাল ফলনের স্বার্থে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিবিএ/জেএইচআর/জেডআই