মোসাব্বির হোসাইন,যবিপ্রবি প্রতিনিধি: নোভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরও (যবিপ্রবি) সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ আছে। এ অবস্থায় তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সংসদ টিভির মাধ্যমে পাঠদান করা হচ্ছে।
এছাড়াও দেশের অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। এ অবস্থায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের নির্দেশক্রমে শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের মধ্যে অনলাইন জরিপ চালায় আর জরিপের ফলাফল উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রেরণ করা হয়। এতে প্রায় ৬৭ শতাংশ শিক্ষকগণই অনলাইন ক্লাসের বিপক্ষে মতামত প্রদান করেছেন।
আর এ অনলাইন জরিপের দায়িত্ব প্রদান করা হয় যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ড. মো. আমজাদ হোসেনকে। তার স্বাক্ষরিত প্রদত্ত জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাস খোলার পরে কমপক্ষে ২ সপ্তাহ নিয়মিত তত্ত্বীয় এবং ব্যবহারিক ক্লাসের পর ১/২ সপÍাহ বিরতি দিয়ে লিখিত চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে প্রায় ৬৭ শতাংশ শিক্ষক মতামত প্রদান করেন। এখন প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ (পিডিএফ/পিপিটি/অডিও/ভিডিও আকারে) সরবরাহ করে ক্যাম্পাস খোলার তিনসপ্তাহ পরে লিখিত চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে প্রায় ১৭ শতাংশ শিক্ষক মতামত প্রদান করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মতামত প্রদান করেছেন বাকী শিক্ষকগণ।
উপরোক্ত মতামত ছাড়াও কিছু শিক্ষক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও দেন এ জরিপের মাধ্যমে। তারা জানান, গুগল ক্লাসরুম ব্যবহার, অনলাইন প্রশ্নপত্র সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাইকরণ, অনলাইন ক্লাস টেস্ট ও কুইজ নেওয়া, অনলাইন মডিউল-ভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়া, ভার্চুয়াল ভাইভা নেওয়া, ফেসবুক, মেসেঞ্জার বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ও সাজেশন দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা সহায়তা করা সম্ভব।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি মাসের বেচে যাওয়া বিদ্যুৎ, পরিবহন ও আবাসিক হলের ডাইনিং বিল শিক্ষার্থীদের প্রদান করে সহায়তা করা, বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ডাটা প্যকেজ প্রদান করা এবং একাডেমিক ক্যালেন্ডার রক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নষ্ট না করারও আহ্বান জানান শিক্ষকগণ।
এছাড়াও দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অসুবিধার বিষয়টি চিন্তা করে অনলাইন ক্লাস পদ্ধতিতে যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় অধিকাংশ বিভাগেরই তত্বীয় ক্লাসের পাশাপাশি ব্যবহারিক ক্লাসও প্রয়োজন যা অনলাইনে পরিচালনা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানান শিক্ষকগণ।
অনলাইন ক্লাসের বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, “অনলাইন ক্লাস নেবার জন্য আমাদের অত্যাধুনিক ডিিজটাল বোর্ড সহ প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম রয়েছে। শিক্ষকগণের মতামত নেবার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, মতামত পেলেই আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।
পিবিএ/বিএইচ