পিবিএ, যশোর: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কার্ডিওলজি(হৃদরোগ)বিভাগের চিকিৎসা সেবা এক ধরণের বন্ধের পথে। হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতিই নষ্ট দীর্ঘদিন। সেই সাথে নেই কোন নিজস্ব চিকিৎসক ও অভিজ্ঞ নার্স।হৃদরোগের আক্রান্ত রোগীদের ঠিকানা করনারি কেয়ারইউনিটের বেশ কয়েকটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটি প্রায় অকেজো। এই তীব্র গরমের মাঝেও অধিকাংশ বিদ্যুৎতিক পাখা ও অচল।সব মিলিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ২৮ শয্যার করনারি কেয়ার ইউনিট।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল করোনারি কেয়ার ঘুরে দেখা গেছে,করোনারি কেয়ার ইউনিটের প্রশাসনিক ভাবে ২৮ শয্যার হলেও প্রতিদিন রোগী ভর্তি হয় গড়ে ৬০-৭০ জন রোগী। বেড না পেয়ে অনেক রোগীই মেঝেতে অবস্থান করছে।এক্সারসাইজ টলারেন্স টেস্ট বা স্ট্রেস টেস্ট (ইটিটি) যন্ত্রটি নষ্ট নয় বছর ধরে। ১২টি ইনফিউশন পাম্ব অচল।একটিমাত্র ইকোকার্ডিয়াক যন্ত্র নষ্ট এক বছর ধরে।চারটি ইসিজি যন্ত্রের দুটিই অকেজো। নেই কোনো এনজিওগ্রাম যন্ত্র।যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের অন্য বিভাগ থেকে চিকিৎসক,নার্স,কর্মচারী এনে কাজ চলছে সিসিইউটি।এতে চিকিৎসা সেবা দিতে যেমন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নাজেহাল তেমনি রোগীরাও অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে রোগীরা।
হাসপাতাল প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১২ অক্টোবর এ হাসপাতালে ২৮ শয্যার সিসিইউ চালু করা হলেও ২০১০ সালের সিসিইউর পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হয়। হৃদরোগীদের চিকিৎসার জন্য জরুরি ওয়ার্ডে ছয়টি,পুরুষ ওয়ার্ডে ১৫টি,মহিলা ওয়ার্ডে পাঁচটি ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দুটি সংরক্ষিত শয্যা রয়েছে।চিকিৎসক,নার্সসহ ৮৯টি পদ রয়েছে।এর মধ্যে ২ জন সিনিয়র কনসালট্যান্ট,চারজন জুনিয়র কনসালট্যান্ট,আটজন জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তা এবং ১২ জন চিকিৎসা কর্মকর্তা থাকার কথা।কিন্তু দুঃখের কথা হলো কনোনারি কেয়া স্থাপনের এই কয়েক বছরেও কোন নিয়োগ হয়নি।বর্তমানে সিসিইউটিতে যশোর মেডিকেল কলেজের দুজন সহযোগী অধ্যাপক,একজন সহকারী অধ্যাপক এবং যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের দুজন জুনিয়র কনসালট্যান্ট কর্মরত আছেন।তার পর ডাক্তাদের অতিরিক্ত ডিউটি করতে হচ্ছে।য়ার ফলে চিকিৎসা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসকদের।
হাসপাতাল করোনারি কেয়ার ইউনিটে জরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,সদর উপজেলার ফতেপুর এলাকার আব্দুল খালেক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত বুধবার ভর্তি হয়। বেড না পাওয়ায় তিনি মেঝেতে শুয়ে আছে।তার মতে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক।এখন চিকিৎসায় কোন রকম সুস্থ্য রয়েছে।
ঝিকরগাছা ছুটিপুর এলাকার সালেহা বেগম এই প্রতিবেদক তার বেডের পাশে দেখে কষ্টে বলতে থাকে দেশে উন্নয়ন হচ্ছে শুনছি।কিন্তু এই হাসপাতালে কি কোন উন্নয়ন হচ্ছে না।নেই কোন ভালো চিকিৎসক,নেই বেড।গরমে রোগীরা কষ্ট পাচ্ছে।সরকারের উচিত দ্রুত এই হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ও সংকট দূর করা।
এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডা.আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান,করোনারি কেয়ার ইউনিটে নানা সমস্যায় ভুগছে যেন সেই এখন রোগী। চিকিৎসক সংকট। বেডের চেয়ে রোগীর পরিমান ভর্তি থাকে চার থেকে পাঁচগুণ।যন্ত্র যা আছে তার কয়েকটি নষ্ট। আইসিইউ জরুরি। করোনারি কেয়ার যন্ত্রপাতির সাথে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো খুবই দরকার।করোনারী কেয়ার ও পদ নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতি উত্তরে জানান,স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত ভাবে অনেক চিঠি দিয়েছি।যন্ত্রপাতি ও নিয়োগ দ্রুতই পাবো আশা করি।
পিবিএ/জেএইচ/হক