পিবিএ ডেস্কঃ শরীরে রক্তের মূল উপাদান আয়রন কমে গেলে তার সরাসরি প্রভাব পরে চেহারায়। শরীরে আয়রন ডেফিসিয়েন্সি বা অ্যানিমিয়ার মবল কারণ অপুষ্টি, কৃমি, রক্তপাত ইত্যাদির পাশাপাশি ভুল জীবনযাপন৷ সঠিক খাবার ঠিক সময়ে না খাওয়াও এই অসুখকে ডেকে আনে৷
রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার উৎপাত সম্পর্কে কিন্তু গ্রাম-শহর নির্বিশেষ সকলেই বেশ সচেতন। তবু এই অসুখের হানা ঘরে ঘরেই। মেডিসিন বিশেষজ্ঞের মতে, ‘‘ঘরের ডাল–ভাত খেতে যেন মানুষ ভুলেই গিয়েছেন আজকাল৷ ওজন কমাতে খাচ্ছেন মিল সাপলিমেন্ট আর আনন্দে জাঙ্ক ফুড৷ দিনান্তে এক বার হয়তো ঘরে খাওয়া হয়, তাও চটজলদি বানিয়ে ফেলা যায় এমন খাবার৷ তার পুষ্টিগুণ কতটা, ক্যালোরি মূল্য কত, সে সব নিয়ে কেউই আর মাথা ঘামান না৷ ফলে উপর থেকে দেখতে স্বাস্থ্যকর, এমন মানুষের অন্দরেও বাসা বাঁধছে এই রোগ৷’’
পুষ্টিবিদদের মতে, এই রোগ ঠেকাতে সব অভ্যাস রাতারাতি বদলানো যায় না৷ তবে তাতে চিন্তা করার কিছু নেই৷ একটা–দু’টো করে বদলাতে শুরু করলেই কাজ হয় ম্যাজিকের মতো৷
অভ্যাস বদলানঃ
খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে–পরে চা, কফি, কোলা খেলে খাবারের আয়রন শরীরে ঠিক ভাবে শোষিত হতে পারে না৷ কাজেই এই অভ্যাস বদলে ফেলুন৷
খালিপেটে নয়, ফল খান খাবার খাওয়ার পর৷ ফলের ভিটামিন সি খাবারের আয়রনকে শোষিত হতে সাহায্য করে৷ একই কারণে ভাতের পাতে লেবু খেলেও উপকার৷
ইসবগুল খান খাবার খাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে বা পরে৷ না হলে ফাইবারের ছাঁকনিতে পুষ্টির বেশ কিছুটা আটকে যেতে পারে৷
জাঙ্ক ফুড হল মুখরোচক খাবার৷ পুষ্টির বিচারে খুব একটা দাম নেই৷ বেশি খেয়ে পেটের গোলমাল হলে আরেক সমস্যা৷ কাজেই সপ্তাহে এক–দু’বারের বেশি খাবেন না৷
দিনে অন্তত দু’বার ঘরে বানানো টাটকা সুষম খাবার খান৷ চেষ্টা করুন বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যেতে৷ দিনের একটা খাবার ফল, দই, রায়তা দিয়ে সারার চেষ্টা করুন৷
শুতে যাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে রাতের খাবার খান৷
আয়রন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার একসঙ্গে খেলে কে আগে শোষিত হবে তা নিয়ে শুরু হয় লড়াই৷ সে জন্য মাছ–মাংস–ডিম খাওয়ার পর দুধের খাবার খাওয়া ঠিক নয়৷
রেড মিট, মাছ বিশেষ করে কুঁচো চিংড়ি, ডিম, মেটে ইত্যাদিতে আছে হিম–আয়রন, যা সহজে শরীরের কাজে লাগে৷ আর দুধ ও দুধে তৈরি খাবার, সবুজ শাকসব্জি, মুসুর ও অন্যান্য ডাল, বিন, পাস্তা, ফল, বাদাম, ফর্টিফায়েড ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালে থাকে নন–হিম আয়রন, যা সহজে শোষিত হতে পারে না৷ তবে সঙ্গে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন, লেবু, কমলা, আমলকি বা অন্য টক ফল খেলে শোষণের হার বাড়ে৷
পিবিএ/এমআর