ডেমরার ভাঙ্গা প্রেস এলাকায় ভয়াবহ আগুন লাগা ভবনটি কোনো ধরনের নীতিমালা না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে। ভবনটিতে নেই ফায়ার এক্সিট, ভেতরে ঢোকার সিঁড়িও খুবই সংকীর্ণ। পাশের ভবন থেকে পানি দেওয়ার সুব্যবস্থাও নেই, কারণ ভবনগুলো সব লাগোয়া। শুধু তাই নয় ভবনটির নিচে নেই নিজস্ব কোনো ওয়াটার রিজার্ভ। ভবনটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের ইনসিডেন্ট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, এখানকার ভবনগুলো পাশাপাশি, ঘন ঘন ও লাগোয়াভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। যেটি এখন জ্বলছে তার ঠিক পূর্ব পাশের ভবনটিও লাগোয়া। একই দেয়াল, এক ইঞ্চিও ফাঁকা নেই। এ কারণে আমরা ভবনটির পূর্ব পাশ দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি দেওয়াসহ কোনো কাজই করতে পারছি না।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনের ঢোকার সিঁড়ি খুবই সংকীর্ণ। সঙ্গে মালামাল দিয়ে স্তূপ করে সাজানো। ওঠা-নামার জন্য জায়গাটি মোটেও পর্যাপ্ত নয়। পর্যাপ্ত এক্সিট রুট নেই, বিকল্প কোনো সিঁড়ি নেই, বিকল্প এক্সিট রুটও রাখা হয়নি।
মো. রেজাউল করিম বলেন, ভবনটির নিচে যে ওয়াটার রিজার্ভ থাকার কথা ছিল সেটি আমরা পাইনি। শুধু তাই নয়, এই আগুন লাগা ভবনের আশপাশে যেসব ভবন রয়েছে সেখানেও আমরা পানির রিজার্ভ পাইনি। এইসব ব্যত্যয়ের কারণে আমাদের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, কোনো গোডাউন তৈরিতে যে স্টোরেজ নীতিমালা থাকার কথা সেটি এখানে মানা হয়নি। নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো জিনিস রাখতে হলে গ্যাপ দিয়ে রাখতে হয়। সেটা আমরা এখানে দেখতে পাইনি। আমাদের ফায়ার ফাইটারদের একটা একটা করে জিনিস সরিয়ে ভেতরে ঢুকে কাজ করতে হচ্ছে।
ভবনটির অবস্থা সম্পর্কে এ কর্মকর্তা বলেন, ভবনটি এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। আমরা ভেতরে প্রবেশ করে দেখেছি। ভবনের যে অবকাঠামোগত স্ট্রেন্থ সেটা আর নেই। একেবারে কমে গেছে। ভবনটির এক জায়গায় ছাদ ফেটে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাঠামোগত শক্তি একেবারেই হারিয়েছে ভবনটি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে ডেমরার ভাঙ্গা প্রেস এলাকায় গোডাউনে লাগা আগুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট, নৌবাহিনী ও পুলিশের টিম সমন্বিতভাবে ৯ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।