যেভাবে মুক্তি দেওয়া হবে ভারতীয় পাইলটকে

পিবিএ ডেস্ক: পাকিস্তানে আটক ভারতীয় পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন আজ শুক্রবার বিকেলে মুক্তি পাচ্ছেন। পাঞ্জাবের ওয়াগা সীমান্তে পাইলট অভিনন্দনকে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের গ্রহণ করার কথা রয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, বিকেল তিন থেকে চারটার মধ্যেই মুক্তি পেয়ে যাবেন অভিনন্দন।

indian-pilot-PBA

ওয়াগা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোর জেলার একটি গ্রাম। সীমান্তের অন্যপাশে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ। এই সীমান্ত দিয়েই ১৯৯৯ সালে আটক ভারতীয় পাইলট আম্বামতী নচিকেতাকেও ফেরত দিয়েছিল পাকিস্তান।

ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে এখনো মুক্তির কোনো নির্দিষ্ট সময় বলেনি পাকিস্তান সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তারা জানায়, পাইলটকে হয়তো রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রথমে লাহোরে এনে জেনেভা কনভেনশনের নিয়মানুযায়ী আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটিকে হস্তান্তর করা হবে। ভারত আসার পর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগে কথা বলবেন অভিনন্দন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এমন ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাইলটকে মুক্তির কারণ হিসেবে ইমরান খান বলেছেন, শান্তির বার্তা দিতেই ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি এও হুশিয়ারি দেন যে, পাইলটের মুক্তির সিদ্ধান্তকে পাকিস্তানের দুর্বলতা ভাববেন না।

এদিকে ছেলেকে গ্রহণ করতে বৃহস্পতিবার দিল্লি পৌঁছেছেন অভিনন্দনের বাবা-মা। অভিনন্দনের বাবা ভারতের বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল।

গত বুধবার সকালে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় দুটি ভারতীয় ফাইটার জেটকে ভূপাতিত করে দেশটির সেনারা। এ সময় দুজন পাইলটকে আটকের কথা বলা হলেও তা পরে শুধরে নেন মেজর জেনারেল আসিফ গফফুর। তিনি লিখেন, ‘একজন পাইলট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে।’ পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, উত্তেজনা নিরসনে ভূমিকা রাখলে আমরা ভারতীয় পাইলটকে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে ইমরান খান জানান,এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, আমি তাকে বলেছি যে, আমরা কোনো উত্তেজনা চাই না। তবে আমাদের এই ইচ্ছাকে দুর্বলতা ভাববেন না। এর পর ইমরান খান বলেন, আমাদের কাছে একজন ভারতীয় পাইলট রয়েছেন। শান্তির নিদর্শন হিসেবে তাকে আমরা মুক্তি দিচ্ছি। সেই সময় পার্লামেন্ট সদস্যরাও তাকে সমর্থন দেন।

এদিকে অভিনন্দনকে আটক করার পর দুটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ পায়। এতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বলেন, ‘আমরা দুই প্রতিবেশী শত্রু রাষ্ট্র হলেও পাকিস্তান সেনারা আমাকে আটকের পর চিকিৎসা দিয়েছেন। সম্মান করেছেন। পাক সেনারা খুবই ভদ্রলোক। আমি মনে করি পাকিস্তান সেনাদের কাছ থেকে আমাদের ব্যবহার শেখার আছে।’

অভিনন্দন আরও বলেন, যারা পাকিস্তান সেনাদের বদনাম করেন তারা না জেনে করেন।

এ সময় পাকিস্তান সেনাদের এক সিনিয়র অফিসার বলেন, শত্রুদের প্রতি সদয় হওয়া, তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা আল্লাহর রাসুলের নির্দেশ। পাকিস্তানের মুসলমান রাসুল (স.)-এর নির্দেশ পালন করছে মাত্র।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ভারতের ৪৪ সেনা নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এর পরই প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

পিবিএ/জেআই

আরও পড়ুন...